‘৭৯ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক এবং মানসিক সহিংসতার শিকার’

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সহিংস ঘটনাগুলোর তথ্য সংরক্ষণ এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এজন্য দেশব্যাপী প্রতিবছর সহিংসতা পরিস্থিতি পর্যালোচনার উদ্দেশে গবেষণা সমীক্ষা পরিচালনা করতে হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওশি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সেমিনারে হোমবেজড শ্রমিকদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওশি ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার আরিফা আলম প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

তিনি জানান, ৭৯ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক এবং মানসিক সহিংসতার শিকার। অথচ ৭০ শতাংশ শ্রমিক লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা সম্পর্কে সচেতন নন।

সেমিনারে আলোচক ছিলেন ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এআর চৌধুরী রিপন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম খান, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (বিএফটিইউসি) সভাপতি আব্দুল মুকিত খান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন বাংলাদেশ সভাপতি কামরুল আহসান, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) নেতা ওয়াজেদুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন খান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এডিবির জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ড. রোকেয়া খাতুন, ফেডারেশন অব গার্মেন্ট ওয়ার্কার সভানেত্রী চায়না রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওশি চেয়ারপারসন সাকি রিজওয়ানা।

সাকি রিজওয়ানা বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার পঞ্চম শর্তে লিঙ্গ সমতা এবং নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা দূর করার কথা বলা হয়েছে। তাই এ লক্ষ্য অর্জনে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন, গবেষক ও নাগরিক সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

এআর চৌধুরী রিপন বলেন, গৃহ শ্রমিকদের শ্রম আইনে শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিলে তাদের প্রতি সব ধরনের সহিংসতা ও বঞ্চনার আইনি সমাধান পাওয়া সম্ভব। এজন্য আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) কনভেনশন ১৭৭ অনুসমর্থন করে অবিলম্বে দেশের প্রায় ২০ লাখ গৃহ শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

অধ্যাপক ড. আইনুন নাহার বলেন, দেশের অর্থনীতিতে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস সাপ্লাই চেইনে হোমবেইজড শ্রমিকদের অনেক অবদান থাকলেও তারা অদৃশ্য শ্রমশক্তি। তাদের নিয়োগপত্র, ন্যূনতম মজুরি এবং পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার সুরক্ষায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারে ঢাকা, মানিকগঞ্জ ও গাজিপুর জেলার হোমবেইজড শ্রমিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা তাদের নিম্ন মজুরি, অস্বাস্থ্যকর ও অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রের কথা জানান।