শাজনীন হত্যায় গৃহভৃত্য শহীদের ফাঁসি কার্যকর

চাঞ্চল্যকর শাজনীন তাসনিম রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একমাত্র আসামি গৃহভৃত্য শহীদুল ইসলাম ওরফে শহীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

রায় কার্যকরের পর বুধবার রাতে কারা ফটকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে এ রায় কার্যকর করা হয়। শহীদুলের লাশ তার ভাই মহিদুল গ্রহণ করেছেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতেই শহীদের লাশ তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ডাঙ্গাদুর্গাপুরে পাঠানো হয়েছে।’

এর আগে দুপুরে শহীদের ভাই মহিদুল ইসলামসহ পাঁচজন তার সঙ্গে দেখা করেন বলে জানান তিনি।

শাজনীন হত্যা মামলায় ২০১৬ সালের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচজনের মধ্যে একমাত্র শহীদের সাজা বহাল রেখেছিলেন। বাকি চারজনকে খালাস দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছরের ৫ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ শহীদের মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা আবেদন খারিজ করেন।

এরপর সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। বিচারিক আদালত আসামির মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন। রিভিউ রায় প্রকাশের পর রাষ্ট্রপতির কাছে আসামি শহীদ প্রাণভিক্ষার আবেদন করে। সেই আবেদনও নাকচ হয়।

শাজনীন তাসনিম রহমান

মামলার বিবরণে জানা যায়, ট্রান্সকম গ্রুপের মালিক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমানের মেয়ে স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী শাজনীন তাসনিম রহমান ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানের নিজ বাড়িতে খুন হন। মামলায় ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে তাদের বাড়ির সংস্কার কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান ও গৃহভৃত্য শহীদুল ইসলাম শহীদসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অপর চারজন হলো—ঠিকাদার হাসানের সহকারী বাদল, গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন মিনু ও তার বোন পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল।

পরে ওই বছর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে আসামিরা। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং আসামি শনিরাম মণ্ডলকে খালাস দেন।

হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৬ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীনের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। পরে আসামি শহীদুল জেল আপিল করেন।

জেলা প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম