আনসার বিদ্রোহ: খালাসপ্রাপ্তদের চাকরিতে পুনর্বহাল নিয়ে রায় ২ আগস্ট
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত

সুপ্রিম কোর্ট দিবস : বিশিষ্ট আইনজীবীদের প্রত্যাশা হস্তক্ষেপমুক্ত বিচার বিভাগ

প্রথমবার সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালন করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিচার বিভাগের উপরে নির্বাহী বিভাগের আধিপত্য ও হস্তক্ষেপমুক্ত একটি পরিবেশ তৈরী করার আহ্বান জানিয়েছে দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা।

আগামীকাল মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট দিবস উপলক্ষে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তারা।

‘এমন একটা সময়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে যখন এদেশের বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ অভিভাবক প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রথমবার সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালন করার উদ্যোগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার নিমিত্তে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের আধিপত্য ও হস্তক্ষেপমুক্ত একটি পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানাতে চাই। সেই সঙ্গে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের মাধ্যমে যাতে অধঃস্তন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নির্বাহী বিভাগ সংবিধান ও সর্বোচ্চ আদালতে রায়ের প্রতি সম্মান দেখাবেন বলে আশা করি।’

এ উপলক্ষে বাংলাদেশের সংবিধানের অখণ্ডতা রক্ষা, সমর্থন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, এদেশের নাগরিকদের সব মৌলিক অধিকার বলবৎ করার আদেশ বা নির্দেশ কিংবা জনগুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের গুরুত্বপূর্ণ রায় ও ঐতিহ্য গর্বের সঙ্গে স্মরণ করছি।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট আইনজীবীরা আরো বলেন, অধঃস্তন আদালতে বিচারক নিয়োগ ও বদলি বিষয়ের বিধিমালা দীর্ঘ কালক্ষেপণের পর নির্বাহী বিভাগ ও মন্ত্রণালয় এমন একটি সময়ে স্থানান্তরিত হয়েছে যখন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য এবং যা সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের সঙ্গে প্রয়োজনীয় অর্থবহ পরামর্শ ব্যতীত প্রণয়ন করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অধঃস্তন আদালতকে ১৯৯৯ সালেরমপূর্বের যুগে নির্ধারিত করার শামিল।

তাহলে সর্বোচ্চ আদালত দিবসে আমরা কী বার্তা প্রেরণ করব? এ বিষয়ে জনগণ ও সুশীল সমাজকে সসচেতন করার কোনো বিকল্প নেই। আমাদের ঐকমত্যের মাধ্যমে একত্রিত হয়ে দেশের সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষা করার প্রচেষ্টাকে একত্রিত করে দৃঢ় ও সংকল্পিতভাবে জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করা এবং সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ভিত্তিতে একটি উপযুক্ত স্বাধীন ও পৃথক বিচার বিভাগের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ব্যতীত অন্য কোনো বিকল্প নেই বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সাবেক এটর্নি জেনারেল এ.এফ. হাসান আরিফ ও ফিদা এম. কামাল।

১৯৭২ সালে ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট উদ্বোধন করেন জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। এবার প্রথম সুপ্রিম কোর্ট দিবস পালিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল ২ জানুয়ারিতে।

প্রতি বছর ১৮ ডিসেম্বর দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হলেও এবার এ সময়ে অবকাশকালীন ছুটি থাকায় তা ২ জানুয়ারি করা হচ্ছে। গত ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম