গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রের তিন বিভাগের সমন্বয় থাকা জরুরি : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র ও সুশাসনের বিকল্প নেই। আর গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের মধ্যে সম্পর্ক এবং সমন্বয় খুবই জরুরি। তবে মনে রাখতে হবে এক্ষেত্রে কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং সহযোগী।

প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সুপ্রিম কোর্ট জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি বিভাগের সফলতার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থা একান্ত অপরিহার্য। এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকালে মনে রাখতে হবে এক বিভাগের কর্মকাণ্ডে যাতে অন্য বিভাগের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না হয় বা জাতীয় স্বার্থ বিঘ্নিত না হয়। সকল বিভাগের কর্মকাণ্ডে দেশ ও জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টকে ‘জুডিশিয়াল রিভিউ’ এর ক্ষমতা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে বলেন রাষ্ট্রপ্রধান।

“বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষক এবং চূড়ান্ত ব্যাখ্যা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগ, সংবিধান ও আইনের যে ব্যাখ্যা প্রদান করে তা দেশের সকল আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। একইভাবে হাই কোর্ট বিভাগের আইনের ব্যাখ্যা অধস্তন সকল আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক। সুপ্রিম কোর্টের রয়েছে জুডিসিয়াল রিভিউয়ের ক্ষমতা। কিন্তু এই গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে।”

তথ্য-প্রযুক্তির সব সুবিধা ব্যবহার করে মামলা ব্যবস্থাপনায় আধুনিকতা আনার পরামর্শ দেন রাষ্ট্রপতি।

প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, আইনমন্ত্রী আনিসুল হল, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নুল আবেদীন,  বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল বাসেত মজুমদার প্রমুখ।

প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর প্রথম কার্যক্রম শুরু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রথম কার্যদিবসকে প্রতিবছর সুপ্রিম কোর্ট দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিন্তু গত ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে পূর্ব নির্ধারিত ছুটি (অবকাশ) থাকায় আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দিবসটি পালন করা হয়।

সুপ্রিমকোর্ট প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম