পুলিশ (প্রতীকী ছবি)
পুলিশ (প্রতীকী ছবি)

কোটিপতি পুলিশ কনস্টেবল!

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আলোচিত কনস্টেবল মিজানুর রহমান হাওলাদারের (নম্বর ৪১৫০) বিভিন্ন ব্যাংকে ২ কোটি টাকা রয়েছে। প্রাইভেট কারে চলাফেরা এবং ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন সেক্টর থেকে মাসিক কালেকশনের মূল হোতা হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কনস্টেবল মিজানুরের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহাপুলিশ পরিদর্শক ও কেএমপিসহ ৭টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক মহলে এ অভিযোগ করা হয়। বিষয়টি স্বীকার করেছেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) সহকারী পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. তারিক রহমান ও কেএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার কামরুল ইসলাম।

এ ঘটনার পর মিজানুরকে কেএমপির ট্রাফিক বিভাগ থেকে গেল ১৮ নভেম্বর বদলি করে খালিশপুর থানাধীন কালীবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ৬টি অভিযোগের মধ্যে এরই মধ্যে কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত কমিটি জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে তদন্ত শেষ হবে। এরপর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা কনস্টেবল মিজানুরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুয়া প্রত্যয়নপত্র দেখিয়ে তিনি অতিরিক্ত রেশন ও শিক্ষাসহায়ক ভাতা তুলেছেন।

তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য ২৮ দিনের ছুটি নিয়ে দেশে অবস্থান করেন। নির্ধারিত ছুটি শেষ হওয়ার ৭দিন পর কর্মক্ষেত্রে যোগ দেন। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কারণ তিনি ট্রাফিক বিভাগের ক্যাশিয়ার হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনেকেই তার রক্ষাকারী। মিজান ঢাকা মেট্রো-গ-১৪২১২৯ নম্বরের একটি প্রাইভেট কারে চলাফেরা করেন।

তার বাসায় ১০টি সিসি ক্যামেরা আছে। নগরীর নূরনগরের জনতা ব্যাংক খুলনা শাখায় ১ কোটি এবং শিববাড়ী সোনালী ব্যাংকের শাখায় ১ কোটি টাকা রয়েছে। নগরীর নিউমার্কেটের ঝিনুক হলের দক্ষিণ পাশের একটি বিকাশের দোকান থেকে তিনি বিভিন্ন পয়েন্টের টাকা কালেকশন করতেন।

কেএমপির ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার কামরুল ইসলাম বলেন, মিজানের বিষয়ে তদন্ত চলছে। প্রাথমিকভাবে তিনি বিদেশে না গিয়ে দেশে অবস্থান করার বিষয়ে সত্যতা মিলেছে। এছাড়া মিজানের ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি তার নামে রেজিস্ট্রেশনে নেই।

এটি পার্শ্ববর্তী একটি জেলার একজন ব্যক্তির নামে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে। মিজানের অভিযোগের তদন্তে থাকা কেএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) তারিক রহমান যুগান্তরকে মঙ্গলবার দুপুরে জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে ট্রাফিক বিভাগ থেকে বদলি করা হয়েছে। সব বিষয়ে কাগজপত্রে তথ্যপ্রমাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। দ্রুত তদন্ত শেষ হবে।

তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগের বিষয়ে কনস্টেবল মিজান বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ভুয়া অভিযোগ করেছে। তবে আমি বিদেশে না গিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলাম এটা সত্য। আর আমার কোনো প্রাইভেট কার নেই। আমি অন্য একজনের গাড়ি নিয়ে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। তার ব্যাংকে কোনো টাকা নেই বলে দাবি করেন তিনি।

জেলা প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম