চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে চট্টগ্রাম বারে হট্টগোল: সভাপতি সেক্রেটারির বিরোধ প্রকাশ্যে

৭৩ টি চেম্বার বিতর্কিত বরাদ্দ নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করেছে। চট্টগ্রাম আদালত অঙ্গনে আইনজীবীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ০৮ জানুয়ারি সোমবার সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় এই ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কুমার রায় এবং সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফের মধ্যে চেম্বার বরাদ্দ নিয়ে বিরোধ প্রকাশ্যে ধারন করে আজ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এই দুই নেতার বিরোধের জেরে সংগঠিত অপ্রীতিকর ঘটনায় সমিতির ঐতিহ্য ও সম্মানহানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ আইনজীবীরা।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদানে পাওয়া আইনজীবীদের চেম্বারের জন্য নির্মিত শাপলা ও দোয়েল নামীয় ভবনে চেম্বার বরাদ্দ, বিনিময় এবং স্থানান্তর নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে শাপলা ভবনে টেন্ডার-লটারি ছাড়া ৭৩টি চেম্বার সাধারন সম্পদক নিয়ম বহির্ভূত বরাদ্দ দেন বলে অভিযোগ উঠে। এই বিতর্কিত বরাদ্দ নিয়ে সমিতির বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ২০ ডিসেম্বর সভাপতি রতন কুমার রায় জেলা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রের ৪২ (১) বিধি অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ কে ওই বিষয়ে আলোচনার জন্য জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সাধারণ সভা আহ্বানের নির্দেশ দেন। সাধারণ সম্পাদক ২১ জানুয়ারি সভা আহ্বান করে নোটিশ প্রধান করেন। সভাপতি তার নির্দেশ প্রতিপালিত হয়নি এই কারণ দেখিয়ে ৮ জানুয়ারি (সোমবার) সমিতির ৩ নম্বর মিলনায়তনে সাধারণ সভা আহ্বান করেন। কিন্তু ওই সভার আগেই একই স্থানে সকাল ১১ টা থেকে ‘চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটি’ ব্যানারে আইনজীবীদের মধ্যে যারা ৭৩টি চেম্বার বরাদ্দ পেয়েছেন তারা সাধারন সম্পাদকের সিদ্বান্ত সমর্থন এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কুমার রায়ের সাধারন সভার বিরোধিতা করে আলাদা আলোচনা সভার আয়োজন করে। তাদের অনুষ্ঠান চলাকালীন দুপুর ২টার দিকে বাংলাদেশ আইনজীবী সমিতির সভাপতি রতন কুমার রায় ঘোষিত সাধারন সভা করার জন্য তিন নম্বর মিলনায়তনে যান। দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে এসময় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। মিলনায়তনে সহস্রাধিক আইনজীবী উপস্থিতিত ছিলেন। উপস্থিত সাধারন আইনজীবীরা এগিয়ে এসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেন।

চট্টগ্রাম বারের নির্বাচিত সাবেক সভাপতি সেক্রেটারি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বর্তমান সদস্য অ্যাড.ইব্রাহীম চৌধুরী বাবুল স্পিকার হাতে নিয়ে সবাইকে শান্ত হওয়ার এবং আলোচনা করার আহ্বান জানান। অপরদিকে চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটির সমর্থকরা স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর সমিতির সভাপতি অ্যাড রতন কুমার রায় বক্তব্য প্রধান করে ঘটনার বর্ননা দেন। ব্যাপক হট্টগোলের মধ্যেই এক পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ৭৩টি চেম্বারের বরাদ্দ বাতিল এবং নতুনভাবে উন্মুক্ত টেন্ডারের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়াে ঘোষনা প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যান সভাপতি। এরপর একই জায়গায় পুনরায় ‘চেম্বার স্বার্থ রক্ষা কমিটির ব্যানারে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন সাধারণ সম্পাদক সমর্থকরা। কিছুক্ষণ পর সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ মিলনায়তনে আসেন। তিনি অতীতের বিভিন্ন কমিটির অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এবং বরাদ্দকৃত ৭৩টি চেম্বার বহাল থাকবে বলে ঘোষণা দেন।

বিশেষ প্রতিনিধি/ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কম