গ্রেপ্তার হওয়া ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলাম (ডানে)

বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে উধাও ভূমি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

প্রায় ১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিরোজপুর সার্কিট হাউসের সামনে থেকে গতকাল বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সমন্বিত দল।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সেতাফুলকে পিরোজপুর থানায় সোপর্দ করেছে দুদক।

এর আগে বুধবার বিকেলে দুদক ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাম প্রসাদ মণ্ডল বাদী হয়ে সেতাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন।

‘বস্তাভর্তি টাকা নিয়ে উধাও ভূমি কর্মকর্তা’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রথম পাতায় গত শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার শওকত জাহান বলেন, সেতাফুল ইসলাম কিশোরগঞ্জে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সে সময় অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদিত ভূমি অধিগ্রহণের সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর সেতাফুল ইসলাম বলেন, ‘৯ জানুয়ারি থেকে আমি পিরোজপুরে আছি। আমি আইনিভাবে এ মামলা মোকাবিলা করব।’

জানতে চাইলে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আহমদ ছিদ্দীকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সেতাফুল ইসলামকে পিরোজপুরে পদায়ন করা হয়েছিল। ১৩ ডিসেম্বর তিনি পিরোজপুরে যোগদান করে চলে যান। এরপর থেকে তাঁর সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। পিরোজপুরের পরে তাঁকে ভোলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছিল। সর্বশেষ তাঁকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।’

জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের প্রায় ১৪ কোটি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বস্তায় ভরে পালিয়ে যান সেতাফুল ইসলাম। এর মধ্যে পরপর দুই দিনে তিনি সোনালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখা থেকে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা তুলে বস্তায় ভরে নিয়ে গেছেন। এর আগে তিনি প্রায় আট কোটি টাকা সরিয়ে নেন। এ ছাড়া আরও ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের জন্য ব্যাংক চেক তৈরি করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে তিনি পালিয়ে যান। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সেতাফুল ইসলামের আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ অর্ধশত কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তাঁকে খুঁজে না পেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) বিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

গত ৩ ডিসেম্বর সেতাফুল ইসলামকে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পিরোজপুরের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। ১৩ ডিসেম্বর তিনি পিরোজপুরে যোগদান করেন। এরপর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। প্রথম আলো

সম্পাদনা- ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম