মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ফাইল ছবি)

যেনতেন রায় মানুষ মেনে নেবে না: মির্জা ফখরুল

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যেনতেন রায় দেয়া সোজা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অত সোজা না। যেনতেন রায় দেবেন? মানুষ তা মেনে নেবে না। সঠিক বিচার হতে হবে, ন্যায় বিচার হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্যথায় জনগণ প্রস্তুত আছে। দলের নেতাকর্মীদের বলব আপনারা প্রস্তুত হোন। জনগণকে প্রস্তুত করুন। আমাদের ওপর চেপে বসা এই দানবকে সরাতে হবে। কোনোদিন বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়, স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদকে বরদাশত করেনি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের পরাজিত করেছে। আসুন আমরা সবাই জেগে উঠি, মানুষকে জাগাই।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলীর মুক্তি দাবিতে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, কিন্তু কার কাছে বিচার চাইবো। বিচারের বাণী তো এখন নীরবে নিভৃতে কাঁদে। কেউ কোথাও ন্যায়বিচার পায় না। দেশ ধ্বংস করে এখন ১৬ কোটি মানুষের আশা ভরসার স্থল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দুরে রাখতে চায়। মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার পাশপাশি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জাগিয়ে তোলার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সরকার সুপরিকল্পিতভাবে বিচারবিভাগকে করায়ত্ত করেছে অভিযোগ করে র্মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মামলার রায় দেয়া হবে সেটি কোনো মামলাই হয় না। তার আইনজীবীরা প্রতিটি অভিযোগ খন্ডন করেছেন এবং প্রমাণ হয়েছে, এই মামলা কোনো মামলাই হতে পারে না। সম্পূর্ন মিথ্যার ওপর এই মামলা হয়েছে।

তিনি বলন, যে ট্রাস্টে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততাই নেই, যে ট্রাস্ট গঠনে তার কোনো মন্তব্য নাই, কোনো ডকুমেন্টে স্বাক্ষর নাই, কোনো নির্দেশনা নাই। একটা জাল ফাইল-নথি হাজির করা হয়েছে। আমাদের আইনজীবীরা তা প্রমাণ করে দিয়েছেন, এই নথিটি সম্পূর্নভাবে জালিয়াতি করে ঘষামাজা করে কোনো স্বাক্ষর ছাড়াই রাষ্ট্রপতির প্যাডে সেই নথি তৈরি করা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শেষ দিনে আইনজীবীরা আরো কথা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের কথা বলার কোনো সুযোগ না দিয়ে বক্তব্য শেষ করা হয়েছে এবং মামলার রায় তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কেন এই জোর করা? আইনের স্বাভাবিক যে গতি তা বন্ধ করে দিয়ে দ্রততার সঙ্গে কেন এই রায় দেয়ার চেষ্টা? কারণ একটাই বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দুরে রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা কঠোর হাতে দমনের যে কথা সরকার বলছে, তার প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, এই কথা বলছেন কেন? কারণ রায় তো আগে থেকেই নির্ধারন করা হয়ে গেছে। আপনারা বলছেন ৮ থেকে দশ দিনের মধ্যে রায় হতে যাচ্ছে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সরকার অন্যায় আচরণ করছেন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা ছিলেন। তার সঙ্গে আপনারা যে আচরণ করছেন, পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে তা নজিরবিহীন। আমরা এর নিন্দা জানাই। জাতি এর জন্য কোনোদিন আপনাদের ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিন স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদী বরদাশত করেনি। জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে তা পরাজিত করেছে।

উক্ত প্রতিবাদ সভা আয়োজন করে সংগঠনের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর বিএনপি দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।

নগর প্রতিনিধি/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম