মালদ্বীপের পার্লামেন্ট সেনাবাহিনীর দখলে

প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন-এর অভিশংসনের গুঞ্জন চলতে চলতেই মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ভবন নিজেদের দখলে নিয়েছে সে দেশের সেনাবাহিনী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি নিশ্চিত করেছে।

তারা জানিয়েছে, এরইমধ্যে পার্লামেন্ট সিলগালা করে দিয়েছে সেনারা। এদিকে বিরোধী দুই নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিরোধীরা দাবি করছিলো, প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে দেশকে সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টার মাথায় সেখানে সেনা-অভ্যুত্থানের আশঙ্কা সৃষ্টি হলো। এরইমধ্যে বিরোধীরা রাষ্ট্রের শীর্ষ আইন কর্মকর্তার ওপর অনাস্থা এনেছেন। সাবেক স্পিকার আব্দুল্লাহ শহীদ এবং বিরোধী নেতা মোহাম্মদ সলিহ জানিয়েছেন, দেশটি নিয়মতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তিন দিন আগে সুপ্রিম কোর্ট বিরোধী ৯ নেতার বিরুদ্ধে আনা সরকারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে মুক্তির নির্দেশ দেয়। কিন্তু সরকার তাতে মোটেও কর্ণপাত করেনি। মালদ্বীপের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে অভিশংসনের শঙ্কায় পড়েন সে দেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে উদ্ধৃত করে আল জাজিরা তাদের পূর্ববর্তী এক প্রতিবেদনে জানায়, সর্বোচ্চ আদালত এজন্য প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের অভিশংসনে প্রচেষ্টা নিয়েছে। এক পর্যায়ে পদত্যাগ করেন সংসদ সচিবালয়ের সচিব এবং উপসচিব। এর কিছুক্ষণ পরেই সেনাবাহিনী পার্লামেন্টের দখল নিয়ে সিলগালা করে দিল।

মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট গত বছর বরখাস্ত হওয়া বিরোধীদের দলের ১২ সংসদ সদস্যকেও পুনর্বহাল করে। এর ফলে বিরোধী দল ৮৫ আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গেছে। মালে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পুলিশ ইতোমধ্যে বিরোধী দলের দু্ই সংসদ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বলে বাহিনীর এক মুখপাত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে। আব্দুল্লাহ সিনান ও ইহাম আহমেদ নামে ওই দুই সংসদ সদস্য আদালতে পুনর্ববহাল হওয়া ১২ জনের মধ্যে অন্যতম। সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারাও পদত্যাগ করেছেন। কোনও কারণ ব্যাখ্যা না করে আহমেদ মোহামেদ আল জাজিরাকে বলেন ‘আমি পদত্যাগ করেছি।’ নিসাদ জনগণকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সেনা ও পুলিশ প্রধানকে গ্রেফতারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট ইয়ামিনকে অভিশংসনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মোহামেদ আনিলকে বরখাস্তের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রধানদের দুই পাশে নিয়ে এক টেলিভিশনে তিনি বলেন, আমি সব আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে বলেছি, তাদের এমন অবৈধ নির্দেশ মানা উচিত হবে না। সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী অনিলের উপদেশ মেনে চলবে। মালদ্বীপের সংকটের মধ্যে পতিত হওয়া বসে থেকে দেখবে না।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম