‘বেগম জিয়ার জামিনের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের গাফিলতি স্পষ্ট’

বিএনপির আইনজীবীরা বেগম জিয়ার মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে এই মামলার সত্যায়িত কপি দিয়েও জামিনের আবেদন করতে পারতেন। কিন্তু তারা সেটা করেননি বরং তারা ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ের কপির পরিবর্তে তিন হাজারের বেশি পৃষ্ঠার কোর্ট ফোলিও (বিশেষ স্ট্যাম্প পেপার) জমা দিয়েছে। যে কারণে রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি তৈরি করতে কর্তৃপক্ষের প্রায় আঠারো দিনের মতো সময় লেগেছে। সুতরাং এক্ষেত্রে বিএনপি আইনজীবীদের গাফলতি স্পষ্ট। জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিএনপি আইনজীবীরা নিজেরাই চায় বেগম জিয়া জেলে থাকুক। ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে দুদক। যেখানে আওয়ামী লীগের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। মামলার পূর্বে আওয়ামী লীগের কেউ বলেনি বেগম জিয়ার সাজা হবে। আদালত বেগম জিয়াকে সাজা দিয়েছে। আদালতে বিএনপির পক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি যদি দেশের আইন ও আদালতের উপর সম্মান রাখে তাহলে অবশ্যই তাদের আদালতের আদেশ মানতে হবে। কিন্তু বিএনপি আদালতের আদেশের উপর সম্মান না রেখে উল্টো বেগম জিয়ার রায়কে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে।

বিএনপিকে দেশের আইনের শাসনের প্রতি আস্থা রেখে বেগম জিয়ার মামলা আইনি প্রক্রিয়ায় লড়ার পরামর্শ দিয়ে আফজাল হোসেন বলেন, বেগম জিয়ার মামলাটি নিয়ে বিএনপি একশ নয় বার সময় নিয়েছেন। পঁয়ত্রিশ বার এই মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে। ছাব্বিশ বার বিএনপি উচ্চ আদালতে গিয়েছে। মামলার মধ্যে বিচারিক উপাদান আছে বলেই উচ্চ আদালত থেকে বিএনপিকে বার বার ফিরত পাঠানো হয়েছে। এখন বিএনপির উচিত আদালতের উপর সম্মান রেখে রায়কে মেনে নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া। আইনের মাধ্যমে বেগম জিয়া জেলে গিয়েছেন এখন বিএনপির উচিত আইনের প্রতি আস্থাশীল থেকেই বেগম জিয়াকে জেল থেকে মুক্ত করা। কেননা বর্তমানে দেশে আইনের শাসন কায়েম হয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে জজ নিয়া নাটক সাজিয়ে দেশের বিচারব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে। সুতরাং দেশের মানুষ জানে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশে আইনের শাসন রোহিত হয়।

বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের অন্যায় হস্তক্ষেপ নেই উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে দেশের সকল রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দিতে পারে। তেমনি বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের অন্যায় হস্তক্ষেপ নেই। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি মনে করে বিএনপির কর্মসূচি থেকে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাহলে নিশ্চয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব সেটাকে শক্ত হাতে দমন করা। এখানে সরকারের কোনো বক্তব্য নেই। দেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতীতে যেমন কাজ করে এসেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রিন্স মাহামুদ আজিম