রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রথিশ চন্দ্র ভৌমিক (ফাইল ছবি)

আইনজীবী রথীশ চন্দ্রের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী-কন্যা আটক

পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর রংপুর স্পেশাল জজ আদালতের পিপি, জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবুসোনার লাশ উদ্ধার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

র‍্যাব-১৩-এর মেজর আরমিন রাব্বি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মঙ্গলবার মধ্যরাতে বাবুসোনার বসতবাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া জামে মসজিদের কাছের একটি নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝে খুঁড়ে তাঁর লাশটি উত্তোলন করেন র‍্যাব সদস্যরা। পরে পরিবারের সদস্যরা এসে লাশটি শনাক্ত করেন।’

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় র‍্যাব সদস্যরা বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও মেয়ে অদিতি ভৌমিককে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে। তারপরই লাশের সন্ধান মেলে বলে জানালেন এ কর্মকর্তা। তিনি আরো জানান, তাঁদের আটক করা হয়েছে।

এ ছাড়া এ ঘটনায় আরো দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম পাওয়া গেছে। তিনি হলেন কামরুল ইসলাম। তিনি বাবুসোনার স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা স্নিগ্ধা ভৌমিকের সহকর্মী। কামরুলের নির্মাণাধীন বাড়ি থেকেই বাবুসোনার লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। আটক আরেকজনের নাম জানা যায়নি।

গত শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেননি রংপুরের এই রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। পাশাপাশি তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শহরের মানুষের কাছে তিনি ডাকনাম বাবুসোনা নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন।

রথীশ চন্দ্র ভৌমিক রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও ও খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় সরকারপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন। এ মামলা দুটিতে ১৮ জেএমবি সদস্যের ফাঁসির রায় দেন আদালত। এ ছাড়া জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধী মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন অ্যাডভোকেট বাবুসোনা।

পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছিল, এসব মামলা সংক্রান্ত কারণে হয়তো জঙ্গি-সংশ্লিষ্ট কোনো গোষ্ঠী অ্যাডভোকেট বাবুসোনাকে অপহরণ করেছে। ঘটনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ, জেলা আইনজীবী সমিতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ তাঁর সন্ধানের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল।

বাবুসোনা নিখোঁজের ঘটনায় তাঁর ভাই সাংবাদিক সুশান্ত কুমার ভৌমিক বাদী হয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাবও ছায়াতদন্তে নামেন এ ঘটনায়।

স্নিগ্ধার সঙ্গে কামরুলের সম্পর্কের জের ধরেই বাবুসোনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।