শিক্ষক নিবন্ধন নিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষকদের নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সনদের মেয়াদ থাকবে বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে আদালত সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ইশরাত হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন । তিনি বলেন, প্রায় ১৬৬টি রিটের ওপর দেওয়া ৪৯ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলুপি মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) হাতে পেয়েছি।

গত ১৪ ডিসেম্বর রায়টি ঘোষণা করেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদউল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ।

ওইদিন রায়ের পর ইশরাত হাসান জানান, মেধা তালিকার ক্ষেত্রে জেলা-উপজেলা কোটা বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে তৈরি করে তা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে দেওয়া সাত দফা নির্দেশনায় বলা হয়-

  • নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সনদ দিতে হবে। নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত সনদ বহাল থাকবে।
  •  রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর থেকে ৯০ দিনের মধ্যে উত্তীর্ণদের নিয়ে একটি জাতীয় মেধা তালিকা করতে হবে। এ তালিকা এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
  • একটি জাতীয় মেধা তালিকা করতে হবে। বিভাগ, জেলা, উপজেলা বা জাতীয় তালিকা নামে কোনো তালিকা করা যাবে না।
  • এনটিআরসিএ প্রতিবছর মেধা তালিকা হালনাগাদ করবে।
  • সম্মিলিত মেধা তালিকা অনুযায়ী রিট আবেদনকারী এবং অন্য আবেদনকারীদের নামে সনদ জারি করবে।
  • নিয়োগের উদ্দেশ্যে এনটিআরসিএ কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবর যদি কোনো সুপারিশ করে তবে কপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য গঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটি বা গভর্নিং কমিটি বাতিল করবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড।
  • এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নির্ধারণ করতে শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে সরকার।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ-প্রত্যায়ন বিধিমালার ২০০৬ এর বিধি ৯ এর উপ-বিধি ২(গ) বলা হয়েছে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের উপজেলা, জেলা এবং জাতীয়ভিত্তিক মেধাক্রম অনুসারে ফলাফলের তালিকা প্রণয়ন ও প্রকাশ করা হবে।

এ বিধি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন জামালপুরের সেলিম রেজাসহ ১৭২ জন নিবন্ধন সনদধারী। পরে আরও বিভিন্ন সময়ে অনেক সনদধারী রিট করেন। আইনজীবীদেরমতে এর সংখ্যা ১৫ থেকে ২০ হাজার সনদধারী হতে পারে।

পরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজেলা, জেলা কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এছাড়া নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ১৪ ডিসেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়।