‘খালেদা জিয়াকে ভিডিও কনফারেন্সে আদালতে হাজির করা যেতে পারে’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ায় তাকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে আদালতে হাজির করা যেতে পারে বলে মত দিয়েছেন দুদকের আইনজীবী। একইসঙ্গে মামলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কারাবান্দি খালেদা জিয়ার হাজিরার ব্যবস্থা নিতে আদালতের কাছে আবেদন করতে চায় দুদক।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে না পারায় দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম শুরু হয় সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে। আজ এই মামলায় খালেদা জিয়াকে হাজির করার দিন ধার্য ছিল। তাকে হাজির না করায় আগামী ২২ এপ্রিল যুক্তি উপস্থাপনের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।

আদালতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘এই মামলায় অন্য আসামীরা আদালতে হাজির আছেন। খালেদা জিয়াকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে হাজির করে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা যেতে পারে। সম্প্রতি ভারতে ‘জাদব’ নামে এক আসামীকে এভাবে আদালতে হাজির করে মামলা পরিচালনা করে রায় দেওয়া হয়েছে।’

তবে দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আদালত চলবে। গণতান্ত্রিক দেশে এমন বিচার চলতে পারে না। কীভাবে নিম্ন আদালত চলবে— সে বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিচার চালানো নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করা ঠিক না।’

আদালতে দুদকের আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি আগে থেকে আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। তার জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাকে ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। তবে সেই ওষুধ তিনি খাচ্ছেন না। খালেদা জিয়াকে ব্যক্তিগত চিকিৎসক দেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষ ব্যব্স্থা নিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ সময় খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান বলেন, দুদকের আইনজীবী যে বললেন, তিনি (খালেদা জিয়া) ওষুধ খাচ্ছেন না, সেটা সত্য নয়। এটা তো কারা কর্তৃপক্ষ বলবে। এমন কোনও তথ্য কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলাটির অন্য আসামিরা হলেন— বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী; তার তৎকালীন একান্ত সচিব এবং বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।