ছবি - বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

সুন্দরবনের নিকটবর্তী ১৯০ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ২৪টি ‘হুমকিস্বরূপ’

বিশ্বের প্রথম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে স্বীকৃতি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের আশেপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ১৯০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি প্রতিষ্ঠান লাল শ্রেণিভুক্ত। বাকিগুলো কমলা ও সবুজ শ্রেণিভুক্ত। হাইকোর্টের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে দাখিল করা প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। লাল শ্রেণিভুক্ত এসব প্রতিষ্ঠান পরিবেশের জন্য ব্যাপক হুমকিস্বরূপ বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদন দাখিলের পর আদালত বলেছেন, ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্টের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী পরিবেশগত প্রতিপন্ন এলাকায় লাল শ্রেণির শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকার সুযোগ নেই। কারণ এগুলো মাটি, পানি ও বায়ু ব্যাপকভাবে দূষিত করে। পরে আদালত আগামী ৯ মে প্রতিবেদনের ওপর আদেশ দিতে দিন ধার্য করেন।

এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২০১৭ সালে সুন্দরবনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বর্তমানে কতগুলো শিল্প-কারখানা রয়েছে তার তালিকা দাখিলে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট সুন্দরবনের আশপাশে নতুন শিল্প-কারখানা অনুমোদনের উপর নিষেধাজ্ঞা দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। একই সঙ্গে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমোদন কেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৯ সালের ৩০ আগস্টের প্রজ্ঞাপনের লঙ্ঘন হবে না এবং নতুন শিল্প কারখানা কেন অপসারণ করা হবে না -তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

এছাড়া ওই ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বর্তমানে কতগুলো শিল্প-কারখানা রয়েছে তার তালিকা তৈরি করে ছয় মাসের মধ্যে দাখিল করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেন আদালত।

সুন্দরবনের আশেপাশে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা শিল্প-কারখানার অন্যত্র সরিয়ে নিতে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের সভাপতি শেখ ফরিদুল ইসলাম ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। রিটে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপার (এসপি) বিবাদি করা হয়।