টাঙ্গাইলের নির্বাহী হাকিমকে অব্যাহতি দিল হাইকোর্ট

১৮ মাসের সেই শিশুকে আপাতত খালার হেফাজতে রাখার আদেশ দিয়ে টাঙ্গাইল ‘ক’ অঞ্চলের ম্যাজিস্ট্রেটকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতের তলবে হাজিরের পর তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

আজ সোমবার (৯ এপ্রিল) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে শিশুর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শ ম রেজাউল করিম, খালার পক্ষে আইনজীবী সুব্রত সাহা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে আইনজীবী অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

গত ৩ এপ্রিল ১৮ মাসের শিশু অংশুকে খালার হেফাজতে দেওয়ার ঘটনায় টাঙ্গাইল ‘ক’ অঞ্চলের ম্যাজিস্ট্রেটকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

ওই আদেশ অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোমবার হাইকোর্টে হাজির হন। একইসঙ্গে শিশু অংশুমান দে’কে আদালতে হাজির করা হয়। উপস্থিত ছিলেন শিশুর মা জেবা রানি, খালা ও নানি।

আদালতের আদেশের পর শ ম রেজাউল করিম বলেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী এখন শিশু অংশুমান আপাতত খালার হেফাজতে থাকবে। তবে তার মা মাঝে মধ্যে তার সন্তানকে দেখাশোনার সুযোগ পাবেন। মামলাটি এখন উপযুক্ত এখতিয়ার সম্পন্ন দেওয়ানি আদালতে যাবে। দেওয়ানি আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের ভিত্তিতে দত্তক বিষয়ে এই মামলায় রায় দেবেন। ওই রায় না হওয়া পর্যন্তই অংশুমান তার খালার কাছে থাকছে।

শিশুটির মা জেবা রানি দে’র করা এক আবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চান্দশী গ্রামের বিপুল দে ও জেবা রানি দম্পত্তির একমাত্র পুত্র সন্তান অংশুমান দে। শিশুটির বয়স যখন একবছর তখন তার খালা-খালু তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর শিশুটির খালা ও খালু নিঃসন্তান দম্পতি হওয়ায় দু’তিনদিনের জন্য শিশু অংশুমানকে নিয়ে যান। এরপর ওই শিশুর বাবা-মা তাদের সন্তান ফেরত চাইলে সন্তান না দিয়ে তাদের বাড়িতে আটকে রাখেন।

এ অবস্থায় নিজ সন্তানকে ফেরত পেতে গত ১৬ জানুয়ারি টাঙ্গাইল ‘ক’ অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করেন শিশুটির বাবা-মা। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঘাটাইল থানার ওসিকে শিশুটিসহ তার খালাকে হাজির করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি শিশুটিকে হাজির করা হলে তাকে তার মায়ের কাছে ফেরত দেন আদালত।

এরপর আবার ২১ মার্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে শিশুটিকে তার খালার হেফাজতে দেওয়ার আদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

নির্বাহী হাকিমের এ আদেশটি চ্যালেঞ্জ করে শিশুটির মা হাইকোর্টে ওই রিট দায়ের করেন।