জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সক্রিয় আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা

 

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী আইনজীবীরা। নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী এই আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও নিজ নিজ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।

অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতিসহ আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের এ তালিকায়। তারা নিজেদের এলাকায় রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। সাধারণ মানুষকে আইনি সহায়তাও দিচ্ছেন। অনেকে উচ্চ পর্যায়ে লবিং-তদবির করছেন। আগ্রহী এই প্রার্থীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে তাদের এলাকায় গিয়ে কাজ করতে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন লৌহজং এলাকার কৃতী সন্তান, দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। গত তিন বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমেও নিয়মিত অংশ নিচ্ছি। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী বিতরণ, ঈদ ও পূজা-পার্বণে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন কাপড় বিতরণ, মন্দিরে অর্থ দেওয়া, অসহায় ও গরিব মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণসহ নানা ধরনের সহযোগিতাও করছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী। এ আসনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের বেগম সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। প্রধানমন্ত্রী ও দল চাইলে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবেন।

পিরোজপুর-১ আসন থেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শ. ম. রেজাউল করিম। সুপ্রিম কোর্ট বারের এই সাবেক সম্পাদক বার কাউন্সিলের আগামী ১৪ মে’র নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিয়মিত যোগাযোগ রাখায় এলাকার মানুষের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন পেলে জয়লাভের বিষয়ে আশাবাদী তিনি। এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম এ আবদুল আউয়াল।

অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু ঢাকা-৭ (লালবাগ-কোতোয়ালি) থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য তিনি। পুরান ঢাকার রাজার দেউড়ীতে জন্ম নেওয়া এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এই নেতা নির্বাচন করার ইচ্ছা জানিয়ে জানান, সভানেত্রী ও দল মনোনয়ন দিলেই কেবল প্রার্থী হবো।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের (অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল) দায়িত্ব পালন করছেন মোখলেসুর রহমান বাদল। আগামী নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদি) থেকে নৌকার প্রার্থী হতে চান তিনি। এ জন্য তিনি এলাকায় সার্বক্ষণিকভাবে গণসংযোগ করছেন। এ আসনের বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ নেতা মো. সোহরাব উদ্দিন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান জনপ্রিয় অ্যাডভোকেট বাদল ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যকরী কমিটির সদস্য ও পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

আশাবাদী আরও দশ এমপি : আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতি করে এমপি হয়েছেন এমন আইনজীবীও কম নয়। তাদের কেউ কেউ মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন বা করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া (গাইবান্ধা-৫), আইনমন্ত্রী আনিসুল হক (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪), খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম (ঢাকা-২), সাহারা খাতুন (ঢাকা-১৮), আবদুল মতিন খসরু (কুমিল্লা-৫), নুরুল ইসলাম সুজন (পঞ্চগড়-২), মাহবুব আলী (হবিগঞ্জ-৪), ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস (ঢাকা-১০), মো. শামসুল হক টুকু (পাবনা-১) ও রহমত আলী (গাজীপুর-৩)। তারাও আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন।