মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি শাহরুখ জে কাঠাওয়ালা

রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এজলাসে শুনানি চালালেন বিচারপতি!

 

রাত শেষ হয়ে আসছে তখন। ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ৩টা পেরিয়ে গেছে। ভোরের পাখিরাও ডাকতে শুরু করে দিয়েছে অল্পবিস্তর। ভোরের আলো ফোটার অপেক্ষা। তখনো এজলাসে বসে একের পর এক মামলার শুনানি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ঘুমের লেশমাত্র নেই চোখে। যেন সকালে সবে এসে বসেছেন এজলাসে।

কোনো কল্পকাহিনী নয়, গত শুক্রবার এই ঘটনা ঘটিয়েছেন মুম্বাই হাইকোর্টের বিচারপতি শাহরুখ জে কাঠাওয়ালা। জমে থাকা মামলার পাহাড় সরাতে এ কাজ করেছেন তিনি।

দু’সপ্তাহ আগে এজলাসে মাঝরাত পর্যন্ত বসে শুনানি চালিয়ে গেছেন বিচারপতি কাঠাওয়ালা। শুক্রবার তিনি এজলাসে বসেছিলেন সকাল ১০টায়। বিকেল ৫টায় হাইকোর্টের বাকি সব এজলাস ফাঁকা করে অন্য বিচারপতিরা গাড়ি নিয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে গেলেও, একটি মাত্র ঘর তখন ভিড়ে গিজগিজ করছিল।

সেই এজলাসে একের পর এক মামলার শুনানি হচ্ছে। বাদী, বিবাদী সব পক্ষের বক্তব্য, পাল্টা বক্তব্য মন দিয়ে শুনে চলেছেন বিচারপতি কাঠাওয়ালা। রায় বা নির্দেশ অথবা তার মতামত দিয়ে চলেছেন একের পর এক মামলায়। অক্লান্ত।

ঘড়ির কাঁটা বিকেল ৫টা থেকে ৬টা, ৬টা থেকে ৭টা, ৮টা, ৯টার ঘরে চলে গেলেও এজলাস থেকে উঠে যেতে দেখা যায়নি বিচারপতি কাঠাওয়ালাকে।

মাঝরাত পেরিয়ে গেল। রাত ২টা পেরিয়ে ঘড়ির কাঁটা ৩টায়। বিচারপতি কাঠাওয়ালার এজলাসে তখনো একের পর এক শুনানি চলছে। শেষমেশ রাত সাড়ে ৩টায় এজলাস ছেড়ে উঠে আদালত চত্বরে দাঁড় করানো তার গাড়িতে চেপে বাড়ি ফিরলেন বিচারপতি।

আদালতে শনিবার কখন আসবেন বিচারপতি কাঠাওয়ালা, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল আইনজীবী, বিচারপতিদের মধ্যে। সবাইকে চমকে দিয়ে এ দিন কাঁটায় কাঁটায় সকাল ১০টায় এজলাসে ঢুকলেন তিনি।

এক প্রবীণ আইনজীবীর কথায়, তাকে দেখে আমরাও উৎসাহিত হয়ে পড়েছিলাম। ভিড় গিজগিজ করেছে এজলাসে। সারা দিনে একশটি সিভিল পিটিশনের শুনানি হয়েছে তার এজলাসে।

আর এক প্রবীণ আইনজীবী প্রবীণ সামদানি বলেছেন, রাত সাড়ে ৩টায় যখন এজলাস ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখনো তাকে খুব ফ্রেশ লাগছিল। যেন সকালে এসেছেন এজলাসে। শেষ যে কয়েকটা মামলার শুনানি হয়েছে, তার অন্যতম ছিল আমার মামলাটি। তখনো দেখেছি কী ধৈর্য সহকারে আমাদের কথা শুনেছেন উনি। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা