বার কাউন্সিলের নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট

আসন্ন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনি তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

আজ মঙ্গলবার (৮ মে) রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ।

রিট আবেদনকারী আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দ জানান, বার কাউন্সিল আইনের অনুচ্ছেদ ৫(১)-কে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সংবিধানের ১১ অনুচ্ছদ অনুযায়ী প্রশাসনের সব পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু বার কাউন্সিল আইনের ৫(১)(এ) অনুচ্ছেদে অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচন ছাড়াই চেয়ারম্যান। যা সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ, প্রস্তাবনা, ৭, ১৯, ২৬, ২৭, ২৮ ৩১ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

রিটে বার কাউন্সিল অর্ডার অনুচ্ছেদ ৫এ(১) Conseutive (পরপর) এই শব্দটি বাদ দেওয়ার জন্য সংশোধনের নির্দশনা চাওয়া হয়।

আবেদনে বলা হয়, ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। ১৯৭২ সালের বার কাউন্সিল অর্ডারের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ভোটার তালিকা প্রস্তুত হয়নি। এই অর্ডারের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোন বারে ভোটার হবেন, এ জন্য লিখিত অপশন দিতে হবে। অপশন না দিলে তিনি মাদার বারের সদস্য নন। কিন্তু বার কাউন্সিলে অপশন না দিয়ে মাদার বারের ভোটার না করে, সুপ্রিম কোর্ট বারের ভোটার করা সাংঘর্ষিক। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ থাকায় নির্বাচন স্থগিত হয়। তিন মাস পর ওই বছরের জুলাই মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এছাড়া, রিট আবেদনে দুই প্যানেলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সাদা প্যানেল ও নীল প্যানেল দলীয়ভাবে নির্বাচন করছে। যা সংবিধানের প্রস্তাবনা এবং ৭, ১৯, ২৮ ও ৩১ অনুচ্ছদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এছাড়া বার কাউন্সিল আইনের ৬২ (২) ধারাও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ফলে আইনজীবীদের শপথ ভঙ্গ হচ্ছে।

রিটে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পূর্ব ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৪ মে  বার কাউন্সিল নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। এ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের জেলা সদরের সকল দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণ এবং বাজিতপুরসহ দেশের ১২ উপজেলা পর্যায়ে দেওয়ানি আদালত অঙ্গনে স্থাপিত কেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, প্রতি তিন বছর অন্তর বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একজন ভোটার মোট সাতটি ভোট দিতে পারেন। বার কাউন্সিল ১৫ জন সদস্যের সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। বাকি ১৪ জন আইনজীবীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন।

১৪ জনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে একজন ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সারাদেশে সনদপ্রাপ্ত আইনজীবীদের ভোটে সাধারণ আসনে সাতজন এবং দেশের সাতটি অঞ্চলের লোকাল আইনজীবী সমিতির সদস্যদের মধ্য থেকে একজন করে সাতজন নির্বাচিত হন।

সারা দেশের প্রায় ৫৭ হাজার আইনজীবী তিন বছরের জন্য এ নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। নির্বাচন সংক্রান্ত আপত্তি শুনানির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনালও গঠন করে দেয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হলেন- বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলাম। বাকি দু’জন সদস্য হলেন-বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মো. ওজিউল্ল্যাহ।