রাত পোহালেই আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা বার কাউন্সিল নির্বাচন

রাত পোহালেই আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (১৪ মে) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিসহ দেশের দেওয়ানি আদালতগুলোতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনে সরকার সমর্থকদের সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি জোটের জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

বার কাউন্সিলের ১৪ সদস্য নির্বাচনের এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন, দেশের সব জেলা সদরের দেওয়ানি আদালত প্রাঙ্গণে একটি করে কেন্দ্রে। এছাড়া বাজিতপুর, ইশ্বরগঞ্জ, দুর্গাপুর, ভাংগা, চিকন্দি, পটিয়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, ফটিকছড়ি, সন্দ্বীপ, হাতিয়া, নবীনগর ও পাইকগাছা দেওয়ানি আদালতসমূহের প্রত্যেকটির প্রাঙ্গণেও একটি করে ভোট কেন্দ্র থাকবে।

২০১৫ সালের ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৪টি পদে সরকার সমর্থকরা জিতে যায় ১১টি পদে। বাকি তিন পদে জেতে বিএনপি জোট সমর্থক প্রার্থীরা।

এর আগে ২০১২ সালে সাধারণ আসন ও গ্রুপ আসনের ১৪টি সদস্য পদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের ৯ জন প্রার্থী বিজয় লাভ করেন।

তবে এবার সরকার সমর্থকরা তাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে সারা দেশ চষে বেড়িয়েছেন। অপরদিকে বিএনপি জোট চাইছে বার কাউন্সিলে হারানো কর্তৃত্ব পুনরুদ্ধার করতে।

যদিও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বার কাউন্সিলে বিএনপি জোটের প্রার্থী এ জে মোহাম্মদ আলী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বার কাউন্সিল নির্বাচনের রেজাল্ট শিটে কোনও প্রকার কাটা-ছেঁড়া বা ঘষা-মাজা করা যাবে না। ভোটারদের স্ব স্ব আইনজীবী সমিতির পরিচয়পত্র দিয়ে ভোট প্রদানের সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, গতবার রেজাল্ট শিট ঠিক মতো দেওয়া হয়নি। এবার বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে সরকারের কোনও ধরনের হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হবে না।

নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির এই প্রার্থী।

পরে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও কাউন্সিল নির্বাচনের প্রার্থী আবদুল বাসেত মজুমদার বলেন, বার কাউন্সিল নির্বাচনে জয়ী হতে পারবে না, এমন আশঙ্কা থেকেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

তিনি বলেন, সারাদেশের আইনজীবীরা তাদের (বিএনপির নীল প্যানেল) সমর্থন করছে না। এ কারণে পরাজয়ের ভয়ে অমূলক কথা বলে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।

সরকার সমর্থক প্যানেল

সাধারণ আসনে মনোনীত প্রার্থীরা হলেন- আবদুল বাসেত মজুমদার, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সৈয়দ রেজাউর রহমান, শ. ম. রেজাউল করিম, এইচ এ এম জহিরুল ইসলাম খান (জেড আই খান পান্না), পরিমল চন্দ্র গুহ (পিসি গুহ) এবং মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বাদল।

অন্যদিকে গ্রুপ আসনে মনোনীতরা হলেন- ঢাকা জেলার (গ্রুপ -এ) কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, বৃহত্তর ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ বি) মো. কবির উদ্দিনভূঁইয়া, বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ সি) ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ও সিলেট জেলা অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ডি) এ.এফ. মো. রুহুল আনাম চৌধুরী, বৃহত্তর খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ ই) পারভেজ আলম খান, বৃহত্তর রাজশাহী, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) মো. ইয়াহিয়া এবং বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও পাবনা জেলার আইনজীবী সমিতিতে (গ্রুপ এফ) রেজাউল করিম মন্টু।

বিএনপি সমর্থক প্যানেল

সাধারণ আসনে বিএনপি সমর্থিত সাত প্রার্থী হলেন আব্দুল জামিল মোহাম্মদ আলী ( এ জে মোহাম্মদ আলী), মো. ফজলুর রহমান, বোরহান উদ্দিন, মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা, তৈমুর আলম খন্দকার, মো. আব্বাস উদ্দিন ও সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া।

পাশাপাশি গ্রুপ আসনের সাত প্রার্থী হলেন: গ্রুপ এ-তে মো. মহসীন মিয়া, গ্রুপ বি-তে বাঁধন কুমার গোস্বামী, গ্রুপ সি-তে মো. দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, গ্রুপ ডি-তে এ টি এম ফয়েজ উদ্দীন, গ্রুপ ই-তে শাহ মো. ছারিরুর রহমান (এস আর ফারুখ), গ্রুপ এফ-তে মো. ইসহাক, গ্রুপ জি-তে শেখ মো. মোখলেছুর রহমান।