সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের গৃহকর্মী মুক্তা খাতুন ও তার মা

বিচারকের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ

সাতক্ষীরার আমলি আদালত-১ এর বিচারক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে কাজের মেয়ের সাথে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। তাকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ করে কাজের মেয়েটি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব কথা তুলে ধরেছেন।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গৃহকর্মী মুক্তা খাতুন মঙ্গলবার (২৯ মে) এ অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় বিচারক হারুন অর রশিদ প্রভাব খাটিয়ে মেয়েটির বাবা ও ভাইয়ের নামে চাঁদাবাজির মামলা করিয়ে তাদেরকে জেল খাটাচ্ছেন। এমন কি তার সহযোগীদের দিয়ে মেয়েটির বাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মুক্তা খাতুন জানান, সাতক্ষীরার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশীদ ও তার বাড়ি একই গ্রাম খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা গ্রামে। সেই সুবাদে গত তিন বছর যাবত তিনি তার বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসাবে মাসিক ৫শ’ টাকা বেতনে কাজ করে আসছেন।

তিনি জানান হারুন অর রশীদ তার চাকুরিস্থল থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার করে বাড়ি আসতেন। বাড়িতে এসে সুযোগ বুঝে তিনি তার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর প্রতিবাদ করে কাজ করতে না চাইলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন বিষয়টি কাউকে জানালে তার পরিবারকে জেল খাটাবেন তিনি।

এই হুমকির কয়েক দিনের মাথায় হারুন অর রশীদ তার আত্মীয় তালা উপজেলার আলাদিপুর গ্রামের সাজ্জাত হোসেনকে দিয়ে তারই আদালতে একটি মামলা করান। এই মামলায় আসামি করা হয় মুক্তা খাতুনের বাবা আবুবকর মোড়ল, ভাই শরিফুল ইসলাম ও বোন ইরানী পারভিনকে।

গত ১৯ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদের আদালতে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবির মামলা করা হয়। এই মামলায় আবুবকর ও তার ছেলে শরিফুল এখনও জেলে রয়েছেন। আজ বুধবার (৩০ মে) মামলার ধার্য দিন বলে জানান তিনি।

মুক্তা খাতুন ও তার মা ফরিদা বেগম সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, নানাভাবে প্রতিবাদ করতে থাকায় হারুন অর রশিদ তার সহযোগীদের দিয়ে তাদের বাড়িঘর ভেঙ্গেচুরে দিয়েছেন। এর পর থেকে তারা ভাঙ্গা ঘরের ওপর কাগজের ছাউনি দিয়ে কোনো মতে বাস করছেন। প্রায় একমাস যাবত হারুন অর রশিদের ভয়ে তারা বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন। প্রতিরাতে তাদের বাড়ির পাশে উশৃঙ্খল যুবকরা আড্ডা দিয়ে আতংক সৃষ্টি করছে। এমনকি হারুন অর রশিদ এখন কাজের মেয়েটির বোন ঢাকায় অধ্যয়নরত ইরানী পারভিনকে খুঁজছেন পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য।

তিনি আরও বলেন, হারুন অর রশিদ এর আগে আরও দুটি বিয়ে করেছেন। বনিবনা না হওয়ায় তাদের একজনের সাথে মামলা চলছে হারুন অর রশিদের।

সংবাদ সম্মেলনের পর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব থেকে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হারুন অর রশিদের কাছে অভিযোগ বিষয়ে জানতে চেয়ে ফোন করা হলে তিনি সরাসরি বলেন, অভিযোগকারীকে তিনি চেনেন না। তার অভিযোগও মিথ্যা। এরপরই তিনি ফোনটি কেটে দেন। সূত্র: পুর্বপশ্চিমবিডি.কম