কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত একরামের বাসায় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, গাইড লাইন তৈরি হচ্ছে, বন্ধ হবে বিচার বহির্ভূত হত্যা। আইনের বাইরে যাতে কোনো মানুষের মৃত্যু না হয় সেই দায়িত্ব সরকারের।

আজ রোববার দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত কাউন্সিলর একরামুল হকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলার সময় এসব কথা বলেন কাজী রিয়াজুল হক।

এ সময় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রিয়াজুল হক একরামুলের মা হাফেজা খাতুনকে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বলেন, একজন বিচারককে দিয়ে এ ঘটনা তদন্তের জন্য সরকারের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি।

এ সময় একরামুলের মা তাঁর সন্তান হত্যার বিচার দাবি করেন। নিহত একরামুলের স্ত্রী ও দুই মেয়ে বাড়িতে ছিলেন না। ঘটনার কয়েকদিন পর থেকে তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে বলে সন্দেহ হলে সে সব জায়গায় কমিশন প্রতিবাদ জানায়। আমাদের সংবিধান আমাদের দেশের আইন, প্রচলিত আইন, পুলিশি আইন (পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল) সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া আছে, কীভাবে অভিযান চালাতে হবে। সেগুলো অনুসরণ করতে হবে।

কাজী রিয়াজুল হক বলেন, রাষ্ট্র সন্দেহভাজনদের ধরার চেষ্টা করবে কিন্তু সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তালিকা যাতে সঠিক হয়, যাচাই-বাছাই করে অভিযান চালাতে হবে। আইনের বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে। আইনের বাইরে গিয়ে কোনো মানুষ যাতে মৃত্যুবরণ না করে সেটা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এ ব্যাপারে আমরা সরকারকে বারবার বলেছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বলেছি, ডিও লেটার দিয়েছি, সংবাদ মাধ্যমে লিখেছি। মাদকবিরোধী অভিযানে যাতে এ জাতীয় ঘটনা না ঘটে।

মানবাধিকার কমিশনার বলেন, মানবাধিকার কমিশন একটা গাইড লাইন তৈরি করছে অভিযানে কী ধরনের আইন ফলো করতে হবে। আইনগুলো যদি ব্যবহার হয়, কোনো মানুষ বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার হবে না।

নিহত একরামুলের পরিবারের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কাজী রিয়াজুল হক বলেন, প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারের। এই পরিবার যাতে কোনোভাবে আর কোনো ভোগান্তির শিকার না হয়। এ রকম ঘটনা আরো যেখানে হয়েছে সেখানেও আমরা বলেছি। একরামুল হক নিহতের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মো. নজরুল ইসলাম, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল হাসান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত কুমার বড়ুয়া।

সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান চালানোর সময় গত ২৬ মে দিবাগত রাতে টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালীয়াপাড়া সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কে র‍্যাবের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হন। র‍্যাবের দাবি, তিনি তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।

তবে একরামুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, টেকনাফ পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক ছিলেন নির্দোষ। তাঁরা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তও দাবি করেছেন।