দেশে কোনো পেশাতেই নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো দৃশ্যমান কিছু করছেনা

ছোট্ট শিশু রাইফার ঘটনা শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছি। সমবেদনা জানানোর ভাষা আমার নেই। আসলে চিকিৎসায় গাফিলতি নাকি কি, এই বিষয়ে তদন্ত প্রয়োজন, তাই আমি হুট করে কিছু ভাবতে চাইনা। আমরা স্বভাবত চট করে গ্রেফতার করে ফাঁসি চাই আন্দোলন করেই ক্ষান্ত হই। তবে একটি বিষয় সত্য, বাংলাদেশে আমরা কোনো পেশায় জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে, মান নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর কোনো ভূমিকা খুঁজে পাইনা। তারা এতটাই নিজ পেশার স্বার্থ রক্ষায় ব্যস্ত থাকে, কোন অপেশাদারিত্ব বা গাফিলতির কোনো প্রতিকার নাই।

বিদেশে প্রত্যেক পেশার নির্ধারিত বীমা থাকে, বীমা ছাড়া পেশা পরিচালনা অসম্ভব। এতে করে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সঠিকভাবে যাচিত হয়। তবে আমাদের দেশে বীমা দূরের কথা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো প্রচন্ড দুর্বল। লাইসেন্স বাতিলের ঘটনা সাধারণত শোনা যায়না। আমাদের উকিলদের গাফিলতি বা ভুলে মক্কেলের ক্ষতি হলে প্রতিকার নেই, সাংবাদিকের ভুলে ক্ষতি হলে তাতেও প্রতিকার নেই, ডাক্তারের ভুলে হলে নেই, প্রকৌশলী, হিসাব রক্ষক, নিরিক্ষক, ব্যাংকার সবার ক্ষেত্রেই এই বিষয় প্রযোজ্য।

গাফিলতি হলে ফাঁসির দাবি, ভাংচুর, নিজের প্রচারের জন্য দৌড়ে গিয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আর সাথে প্রেস রিলিজ ইত্যাদি করেই আমাদের ক্ষোভ ঝাড়তে হয়। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সমাধান হয়না। এই গুরুত্বপূর্ণ পেশা সমূহের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো শক্ত ভাবে কাজ না করলে, জনগণ কখনও কোনো প্রতিকার পাবেনা, মানসম্মত সেবাও পাবেনা।

বিএমডিসি, ডিজি হেলথ, বার কাউন্সিল, ইঞ্জিনিয়ারস ইন্সটিটিউট, আইক্যাব, কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থাই তাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পেশাসমূহ সঠিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা, অন্তত দৃশ্যমান কিছু করছেনা। রাইফার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক, এটাই চাওয়া। এই ছোট্ট মুখটি আর আসবেনা তার মা-বাবার কাছে।

(বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল- এর ফেসবুক পোস্ট থেকে সংগৃহীত)