ধর্মীয় বিষয়ে স্পর্শকাতর মন্তব্য: শেরপুরের জেলা জজকে প্রত্যাহার
বিচারক (প্রতীকী ছবি)

বিচারকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক নারী (৩১)।

ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে গতকাল সোমবার (২৩ জুলাই) ঝালকাঠির নলছিটি থানার আমিরাবাদের ওই নারী মামলাটি দায়ের করেন। বিচারক শামসুন্নানার অভিযোগের বিষয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে (সিএমএম) বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীর আইনজীবী এ্যাডভোকেট রায়হান মোর্শেদ মামলা এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্ত বিচারক মো. জুয়েল রানা এর আগে ঢাকা জজকোর্টে অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৫ সালে তার আদালতে একটি পারিবারিক রিভিশন মামলা বিচারাধীন ছিল। পরবর্তীতে বিচারক নিজেই বাদিনীকে ফোন করে ওই আদালতে অস্থায়ী স্টেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরি দেন। এর পর তিনি ওই নারীকে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিতে সাঁটলিপি শেখাসহ বিভিন্ন সদুপদেশ দেন। এর মাধ্যমেই তিনি বিশ্বাস অর্জন করেন।

পরবর্তীতে ওই নারী আদালতে নিয়োগ পরীক্ষা দিলেও চাকরি না হওয়ায় একটি কোম্পানিতে চলে যান। তবে বিচারক জুয়েল রানা তাকে ফোন করে আসতে বলেন। না এলে পারিবারিক মামলায় ক্ষতি করবেন বলে হুমকি দেন। তাই বাধ্য হয়ে অফিসে আসেন এবং বিচারকের অধীনে কাজ করতে থাকেন। ২০১৫ সালের ৮ জুন জুয়েল রানা স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে তার বাসায় নিয়ে যান। অথচ বাসায় কেউই ছিল না। এ সুযোগে মাথায় রিভলবর ঠেকিয়ে জোর করে তাকে তিনবার ধর্ষণ করেন বিচারক। সেই সঙ্গে বিষয়টি কাউকে জানালে খুন করে ফেলবেন বলেও হুমকি দেন।

এর পর বাদিনী ওই বাসা থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে গিয়ে চিকিৎসা করান। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩ নভেম্বর বাদিনী অসুস্থ হলে তাকে বিয়ে করে চিকিৎসা করাতে বলেন বিচারককে। উল্টো পাঁচ দিন পর এক র্যাব কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে ধর্ষণ সংক্রান্ত সব কাগজপত্রসহ বাসা থেকে ওই নারীকে আসামির কাছে নিয়ে আসেন। এর পর খিলক্ষেত থানায় ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটের একটি মিথ্যা মামলায় তাকে জেলে পাঠান।

জামিনে মুক্তি পেয়ে ধর্ষণের কাগজপত্রের ডুপ্লিকেট কপি তোলার চেষ্টা করলে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই অজ্ঞাত লোক দিয়ে তাকে আবারও তুলে আনেন জুয়েল রানা। রমনা থানায় নিজে বাদী হয়ে বাদিনীর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাদিনী ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান।