নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন ও প্রচলিত আইন

মাহামুদ ওয়াজেদ:
১.
পৃথিবীর সবদেশেই সড়ক দুর্ঘটনা হয়, বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম না। কিন্তু বাংলাদেশে যে বিষটি ব্যাতিক্রম তা হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনার ব্যপারটি প্রায় মহামারী আকার ধারণ করেছে, এর পিছনে নানান অনিয়ম, দুর্নীতি, কিছু শ্রমিকনেতার অন্যায় আস্কারা, বাস মালিক সমিতির সিন্ডিকেট বর্তমানে ড্রাইভারদেরকে বেশিমাত্রায় বেপরোয়া করে তুলেছে। তাইতো তারা প্রতিদিন ইচ্ছেমত গাড়ি চালিয়ে অ্যাকসিডেন্ট এর দোহাই দিয়ে মানুষ হত্যা করে, মহাসড়ককে মহাশশ্মান বানিয়ে ফেলার পরেও কেউ কোন কথা বলেনা। অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া কয়েকটা মর্মান্তিক ঘটনা, যেমন রাজিবের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরে মারা যাওয়া, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহত ছাত্রকে নদীর জলে ফেলে হত্যা করার বিষয়টি আমাদেরকে নাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি চলন্ত বাসের মধ্যে ধর্ষণ করে হত্যা করার মত দুঃসাহস বাসের শ্রমিকরা দেখিয়েছে। কিন্তু কুর্মিটোলাতে যে শিশু গুলোকে গাড়ি চাপিয়ে মেরে ফেলা হল, তারপর নিরাপদ সড়ক চাই বলে আমাদের কোমলমতি শিশুরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, এটা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।তারা তাদের সহপাঠী হত্যার বিচার চেয়ে রাজপথ কাঁপিয়ে দিয়েছে। আমরা হয়তো কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি, এইদেশে একজন সাধারন মানুষ হয়ে পুলিশের কাছে থেকে কেউ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখার সাহস রাখতে পারে, আড়ং এর গলির রিকশা ১ লাইনে নিয়ে আসতে পারে,আমরা দেখেছি কিভাবে স্কুলইউনিফর্ম পরে একজন মেয়ে ট্র্যাফিক এর দায়িত্বপালন করে চলেছে। সিস্টেমের সমস্যা আমরা সবাই জানি, কিন্ত সমাধান কিভাবে হতে পারে সেটা বাস্তবে এই শিশুরা করে দেখিয়ে দিয়েছে। এদেশের বুকে কিভাবে আঠারো নেমে আসতে পারে তার প্রমান তারা রেখে যাচ্ছে। তারা সাবেক ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদকে চোখে চোখ রেখে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দিয়েছে, তারাও কোন অন্যায় মেনে নিবেনা, যেমনটি ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১এ বঙ্গবন্ধু মেনে নেননি। এদেশ তাদের, তারাই হচ্ছে আগামীর বাংলাদেশ, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কান্ডারি।

২.
যেকোন ধরনের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে পেনাল কোড এর কিছু কিছু ধারাতে সম্পূর্ণ দায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে, আবার কিছু কিছু ধারাতে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। তবে যে ধারাগুলোতে আমারা শাস্তির বিধান দেখতে পাই, সেগুলো আসলে পর্যাপ্ত না। যেমন পেনালকোড এর ৮০ ধারাতে বলা হয়েছে দুর্ঘটনাবশত যা ঘটে যায়, তাহলে তা কোন অপরাধ হবে না। তবে এটাও উল্লেখ করা আছে, কোন প্রকার অপরাধ মূলক উদ্দেশ্য থাকা যাবে না এবং যে কাজটি করাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটবে সেই কাজটি আইনগত পদ্ধতিতে করতেহ বে। এখন আমরা দেখি গতিসীমার বাইরে গাড়ি চালানো অথবা সড়কে বেআইনিভাবে গাড়ি অভারটেকিং কী আইনে সিদ্ধ? না এটা বেআইনি কাজ, তাহলে এরকম কাজের ফলে যে দুর্ঘটনাগুলো সংঘটিত হবে তা স্পষ্টত অপরাধ। এখন দেখতে হবে এরুপ অপরাধের শাস্তির বিধান কোন আইনের কোন ধারায় কিরুপ আছে।

  • পেনাল কোডের ২৭৯ ধারা অনুসারে রাজপথে বেপরোয়া বা তাচ্ছিল্যভাবে গাড়ি চালানোর কারণে যেকোন ব্যাক্তির জীবন বিপন্ন বা আহত বা জখম হতে পারে, অর্থাৎসম্ভাবনা থাকলেই তাকে ৩বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ১০০০ -৫০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড প্রদান করা যায়।
  • পেনাল কোডের ৩৩৬ ধারা অনুসারে এমন কোন কাজ যা দ্বারা যেকোন ব্যক্তির জীবন বিপন্ন বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে, তাকে ৩ মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ২৫০টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড প্রদান করা যায়।
  • পেনালকোডের ৩৩৭ধারা অনুসারে এমন কোন কাজ যা দ্বারা যেকোন ব্যক্তির জীবন বিপন্ন বা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে, সে রকম কাজের মাধ্যমে সাধারণ আঘাত করলে তাকে ৬মাস পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা ৫০০টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড প্রদান করা যায়।
  • পেনাল কোডের ৩৩৮ ক ধারা অনুসারে রাজপথে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে কোন ব্যাক্তিকে গুরুতর আঘাত করলে তাকে ২বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড প্রদান করা যায়।
  • পেনালকোডের ৩০৪ খ ধারা অনুসারে রাজপথে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে কোন ব্যাক্তিকে মৃত্যু ঘটালে তাকে ৩বছর পর্যন্ত কারাদন্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ড প্রদান করা যায়।

উপরের ধারাগুলোতে যে শাস্তির বিধান করা হয়েছে তা আসলেই লঘু শাস্তি। আর সেকারনেই দিনে দিনে বিভিন্ন গাড়ির চালকেরা অন্যায় করার পরে পার পেয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা যদি পেনাল কোড এর ৩০০ ধারার চার নাম্বার উপধারাটি পড়ি, তাহলে দেখতে পাবো, যদি কোন কার্য সম্পাদনকারী ব্যক্তি অবগত থাকে যে, সে এমন একটা আসন্ন বিপজ্জনক কাজ করতে চলেছে, যা খুব সম্ভাবত মৃত্যু ঘটাবে অথবা এরুপ দৈহিক জখম করবে, যা মৃত্যু ঘটাতে পারে, কোন কারণ ছাড়াই এরুপ কাজের মাধ্যমে কাউকে মৃত্যু ঘটালে, তা খুন হিসাবে বিবেচিত হবে।

পেনাল কোডে থাকা একটি উদাহরণ দেখতে পারি, যেখানে বলা হচ্ছে বিনা অজুহাতে “ক” জনতার উপর একটা গুলি ভরা কামান দাগায় এবং তাদের মধ্যে একজনকে নিহত করে। “ক” খুনের অপরাধে দোষী,তার বিচার ৩০২ ধারা মোতাবেক মৃত্যুদণ্ড অথবা সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাথে অর্থদণ্ড হতে পারে, যদিও কোন বিশেষ ব্যক্তিকে হত্যা করার জন্য তার কোন পূর্বপরিকল্পিত কোন মোটিভ ছিলনা।

সুতরাং কুর্মিটোলাতে যে ছাত্র-ছাত্রীকে গাড়ি চাপিয়ে মৃত্যু ঘটানো হয়েছে, সেক্ষেত্রে ঘাতক বাস চালকের বিরুদ্ধে ঘটনার বিচার নতুন করে আইন বানিয়ে করা সম্ভবনা। কারণ ক্রিমিনাল মামলার ক্ষেত্রে আইনের রেট্রোস্পেক্টিভ ইফেক্ট দেওয়া যায়না। সংসদে নতুন আইন পাশ করলেও সে আইনের অধীনে নতুন করে অপরাধকারীদের বিচার করা যাবে। তাই কুর্মিটোলার ঘাতক বাসের সর্বচ্চো শাস্তির জন্য পেনাল কোডের অধীনেই বিচার করা সম্ভব। কারণ ঘতক বাস চালক অন্য একটি বাসের সাথে এমন বিপজ্জনকভাবে রেষারেষি করে চালাচ্ছিলো, যা এক পর্যায়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের উপর চালিয়ে দিয়ে আব্দুল করিম নামক এবং দিয়া খানম দুইজন শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘটায়। যা স্পষ্টত পেনাল কোডের ৩০০ ধারার ৪ উপধারার বিধানের সাথে মিলে যায়। তাই ঘাতক বাস চালকের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা অনুসারে বিচার করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। অথাবা ৩০৪ ধারা অনুসারেও দণ্ডনীয় নরহত্যা খুনের পর্যায় পড়েনা এমন অপরাধের জন্য বিচারকরা যেতে পারে। যেমনটি তারেক মাসুদ এবং মিশুক মনির এর মামলার ক্ষেত্রে করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক ভাবে আরো বলা যায়, কোন ড্রাভারের যদি গাড়ি চালানোর লাইসেন্স না থাকে, তাহলে সে আইনের কোন সুবিধা পেতে পারেনা। কারণ সে শুরু থেকেই অন্যায়কারী। যেমন কোন কোয়াক ডাক্তার কাউকে সার্জারি করতে গিয়ে মৃত্যু ঘটালে পেনাল কোডের বিধান অনুসারে তিনি বিশেষ ব্যতিক্রমে পড়বেন না, ঠিক একইভাবে কোন ড্রাভার লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে তার মূল অপরাধের শাস্তি পাওয়া উচিৎ। এছাড়াও যত দিন না নতুন কোন আইন পাশ হচ্ছে, ততদিন প্রচলিত আইনে বিচার করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। নিরীহ পথচারী বা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের উপরে গাড়ি চাপা দিয়ে মৃত্যু সংঘটিত করা কোন ভাবেই সাধারান অপরাধ হতে পারেনা। এটা দন্ডনীয় নরহত্যা।

৩.
মটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ মোতাবেক ট্রাফিক আইন অমান্য করিলে কি কি শাস্তিও জরিমানা হয় তার সংক্ষিপ্ত বয়ান-

  • মোটরযান অরডিন্যান্সের ১২৮ধারায় বাস মালিক, চালকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আলাদা মামলা দায়ের করা যায়।
  • ধারা-১৩৮ (লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালনা) :সর্বোচ্চ ৪মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০০টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় শাস্তি পেতে হবে।
  • ধারা -১৩৯ (নিষিদ্ধ হর্ন কিংবা শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্র লাগানো ও ব্যবহার) : সর্বোচ্চ ১০০টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
  • ধারা-১৪১ (লাইসেন্স সংক্রান্ত অপরাধ সমূহ) : (১) এই অধ্যাদেশ অনুসারে ড্রাইভিং লাইসেন্স ধারণ করার ও পাওয়ার অযোগ্য কোন ব্যক্তি প্রকাশ্য স্থানে কোন মোটরযান চালালে অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স জোগাড় বা তার জন্য আবেদন করলে এনডোর্সমেন্ট ব্যতীত সে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য হওয়ার পর তার পূর্ববর্তী ড্রাইভিং লাইসেন্সের এনডোর্সমেন্টের কথা প্রকাশ না করে পুনরায় ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহ করলে সর্বোচ্চ ৩ মাসের কারাদণ্ড অথবা পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়বিধ শাস্তি হবে।
    (২) এই আইন অনুসারে কন্ডাক্টরস লাইসেন্স ধারণ করার ও পাওয়ার অযোগ্য কোন ব্যক্তি প্রকাশ্য স্থানে ‘স্টেজ-ক্যারেজ’ করিলে সর্বোচ্চ ১ মাসের কারাদণ্ড কিংবা ২০০টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় বিধ শাস্তি পেতে হবে।
    (৩)যে কোন সময় মোটর যান চালনা কালে এই আইন অনুযায়ী কর্মরত যে কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চাহিবা মাত্র বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হলে দণ্ডস্বরূপ ৫০ টাকা জরিমানা করা হবে।
  • ধারা-১৪২ (নির্ধারিত গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালনা) : প্রথমবার এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক ১ মাস কারাদণ্ড বা সর্বাধিক ৩০০ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়বিধ দণ্ডেদণ্ডিত হবেন এবং তৎপরবর্তী অনুরূপ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩মাস কারাদণ্ড বা সর্বাধিক ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স অনধিক ১মাস মেয়াদের জন্য সাসপেণ্ড করা হবে।
  • ধারা-১৪৩ (বেপরোয়াভাবে কিংবা বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালনা) : প্রথমবার এই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ৫শত টাকা জরিমানা হইবে এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স একটা নির্ধারিত মেয়াদের জন্য সাসপেন্ড থাকবে।
  • ধারা-১৪৪( মদ্যপান কিংবা মাদকদ্রব্য সেবনের পর মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানো) : চালক গাড়ির উপর যথাযথ নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করতে অক্ষম অবস্থায় যদি গাড়ি চালান কিংবা চালানোর চেষ্টাকরেন, তবে অনুরূপ অপরাধ প্রথমবার সংঘটনের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয়বিধ শাস্তি হবে।
  • ধারা-১৪৫ (শারীরিক কিংবা দৈহিকভাবে অনুপযুক্ত অবস্থায় গাড়ি চালনা) : প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৫শত টাকা জরিমানা হবে এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নিদিষ্ট মেয়াদে বাতিল করা হবে।
  • ধারা-১৪৭ (কতিপয় অপরাধ করিতে সহায়তার জন্য শাস্তি) : কোন ব্যক্তি ১৪৩ কিংবা ১৪৫ ধারা অনুযায়ী কোন একটি অপরাধ সংঘটনের সহায়তা করলে তিনি সেই অপরাধের জন্য নির্ধারিত শাস্তি পাওয়ার যোগ্য হবেন।
  • ধারা-১৪৮ (মোটর গাড়ির দৌড়বাজি কিংবা গতি পরীক্ষা) : সর্বোচ্চ একমাস কারাদণ্ড অথবা পাঁচশত টাকা জরিমানা কিংবা উভয় বিধ শাস্তি পাইবার যোগ্য হইবেন এবং তাহার ড্রাইভিং লাইসেন্স সর্বোচ্চ এক বৎসরের জন্য সাসপেন্ড করা যেতে পারে।
  • ধারা-১৪৯ (নিরাপত্তা বিহীন অবস্থায় গাড়ি ব্যবহার) : এই ধারা লংঘন করলে সর্বোচ্চ একমাস কারাদণ্ড কিংবা সর্বাধিক দুইশত পঞ্চাশ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডণীয় হবেন। সর্বোচ্চ তিনমাস কারাদণ্ড বা সর্বাধিক একহাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয়বিধ দণ্ড হবে।
  • ধারা ১৫০ (ধোঁয়া বাহির হওয়া মোটর যান ব্যবহার) : এমনভাবে ধোঁয়া বাহির হয় যাহার ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হইতে পারে, অনুরূপ মোটরগাড়ি কেহ প্রকাশ্য স্থানে চালালে, সর্বোচ্চ দুইশত টাকা জরিমানা হবে।
  • ধারা- ১৫১ (সঙ্গতি বিহীন অবস্থায় গাড়ি বিক্রয় অথবা গাড়ির পরিবর্তন সাধন) : সর্বোচ্চ দুই বৎসর মেয়াদী কারাদণ্ড কিংবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়বিধ দণ্ড দেওয়া হতে পারে।
  • ধারা-১৫২ (রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেট অথবা পারমিট ব্যতীত মটরগাড়ি ব্যবহার) : কোন ব্যাক্তি ৩২, ৪৭, ৫১ (১) উপধারাঅনুযায়ী পারমিট ব্যতীত মোটরগাড়ি চালাইলে প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বাধিক তিনমাস কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
  • ধারা-১৫৪ (অননুমোদিত ওজন অতিক্রম পূর্বক গাড়ি চালনা) : কোন ব্যক্তি ৮৬ অথবা ৮৮ ধারার অধীনে আরোপিত কোন নিষেধাজ্ঞা লংঘন করে গাড়ি চালাইলে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা জরিমানা।
  • ধারা-১৫৫ (অবীমাকৃতমোটরযানচালনা) : কোন ব্যক্তি ১০৯ ধারার বিধান লংঘন করে কোন মোটরযান চালাইলে কিংবা চালানোর অনুমতি দিলে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা জরিমানা শাস্তি পাইবার যোগ্য হবেন।
  • ধারা-১৫৬ (অনুমতি ব্যতীত গাড়ি চালনা) : কোন ব্যক্তি কোন মোটরযানের কিংবা অন্যকোন আইনানুগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট মোটরগাড়ি চালাইয়া বাহিরে লইয়া গেলে সর্বোচ্চ তিনমাস কারাদণ্ড অথবা সর্বাধিক দুই হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়বিধ শাস্তি পাইবার যোগ্য হবেন।
  • ধারা-১৫৭ ( প্রকাশ্য সড়কে অথবা প্রকাশ্য স্থানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি) : সর্বোচ্চ পাঁচশত টাকা জরিমানা হইবে এবং অনুরূপ মোটরযান কিংবা খুচরা যন্ত্র বা জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
  • ধারা-১৬০ (ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতারের ক্ষমতা) : ইউনিফরমধারী পুলিশ অফিসারের সামনে কেউ ৩২, ৫১, ১৪৩, ১৪৪, ১৪৫, ১৪৬, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৫৪ বা ১৫৬ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধ করলে তিনি উক্ত অপরাধীকে ওয়ারেন্ট ব্যতীতই গ্রেফতার করতে পারেন।

লেখকঃ অ্যাডভোকেট, জজ কোর্ট, ঢাকা।