স্ত্রীকে ভাল করে রাঁধতে বলা বা ঠিক মতো ঘরের কাজ করতে বলা মানসিক অত্যাচারের পর্যায়ে পড়ে না বলে মন্তব্য করল বম্বে হাইকোর্ট। সতেরো বছরের পুরনো একটি আত্মহত্যার মামলার রায় দিতে গিয়ে এই কথা বলেন বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি সারঙ্গ কোতওয়াল।
পারিবারিক কলহের জেরে এক নারী আত্মহত্যা করার পর আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেন আদালত। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
বিচারপতি কোতওয়াল জানান, সরকারি পক্ষের উকিল এমন কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি, যার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে মেয়েটির উপরে মানসিক নির্যাতন চালানো হত।
বিচারপতির কথায়, ‘‘শুধু ভাল করে রান্না বা ঠিকমতো বাড়ির কাজ করতে বলার মানে এই নয় যে, মৃতার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হত। ভারতীয় দণ্ডিবিধিতে ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ হিসেবে যে ধরনের মানসিক নির্যাতনের কথা বলা হয়েছে, সে রকম কোনও নির্যাতনের সপক্ষে প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি সরকারি আইনজীবী।
তাছাড়া, মৃতার স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছিল, তারও কোনও প্রমাণ আদালতে দাখিল করা হয়নি।’’
বিচারপতি আরও মন্তব্য করেন যে, ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ প্রমাণ করার জন্য মৃতার আত্মীয় ও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ছিল। তা-ও এ ক্ষেত্রে করা হয়নি।
বিচারপতির কথায়, ‘‘প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের অভিযোগ শুধু সন্দেহের পরিসরেই সীমাবদ্ধ থাকে। এর ভিত্তিতে কোনও অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।’’
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে বিয়ে হয়েছিল বিজয় শিন্ডের। অভিযোগ, বিজয় সব সময়ে স্ত্রীকে রান্না ও বাড়ির কাজ ঠিক মতো না-করার জন্য বকাঝকা করতেন। বিজয়ের সঙ্গে গলা মেলাতেন তাঁর মা-বাবাও। বিয়ের তিন বছর পরে, ঘটনার দিন বিজয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রীর দাদামশাই ও মামাতো ভাই। অভিযোগ, তাঁরা গিয়ে দেখেন বিজয়ের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর প্রবল ঝগড়াঝাঁটি চলছে। পরিস্থিতি কিছুটা সামলে বাড়ি ফেরেন বিজয়ের দাদাশ্বশুর। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বৃদ্ধ খবর পান, বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে নাতনি। মৃত্যুর পরের দিন মেয়েটির স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশের কাছে এফআআইআর দায়ের করেন মেয়েটির আত্মীয়েরা। অভিযোগে আরও বলা হয়েছিল, বিজয়ের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে।