ছবি - বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

বাংলাদেশ ব্যাংকের বইয়ে ‘ইতিহাস বিকৃতি’ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ আহমেদ।

আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন। তিনি জানান, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি আদালত ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং ইস্ট পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিবসহ ছয়জনকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের নাম থাকায় সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ গ্রন্থটি গত মাসে নতুন করে সম্পাদনার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এর আগে, আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালে ২০১৩ সালে এ বইয়ের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা কমিটি নামে দুটি কমিটি করা হয় সে সময়।

পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করার পর ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’। গত ২৫ মার্চ অনুষ্ঠানিকভাবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির।

এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে দৈনিক খোলা কাগজে ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইতে পাকিস্তানের ভূত- ঠাঁই পাননি বঙ্গবন্ধু, আছে স্বৈরাচার আইয়ুব খান’ এবং পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে পাকিস্তানের ভূত- দুরবিনেও মেলে না প্রধানমন্ত্রী ও আ. লীগের অবদান’ শীর্ষক দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বইটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর বইটি নতুন করে সম্পাদনা করা সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

গভর্নর বইটির বিতরণ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং পর্যালোচনার জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন বলে জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, বইটি প্রকাশের আগে সম্পাদনার দায়িত্বে বেশ কয়েকবার রদবদল হয়।

সর্বশেষ এ দায়িত্বে ছিলেন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভংকর সাহা। তার আগে দায়িত্ব পালন করেন আরেক নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মাহাফুজুর রহমান। তারা দুজনই অবসরে গেছেন।