বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে এজাহারে যা বলেছেন নাজমুল হুদা

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় দু’টি মামলার ঘটনায় ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ এনেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তিনি এজাহারে লিখেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলা উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে মামলাটির রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা ও অন্য একটি ব্যাংক গ্যারান্টির আড়াই কোটি টাকার অর্ধেক ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ চান এসকে সিনহা। ২০১৭ সালের ২০ জুলাই এই উৎকোচ চাওয়ার পর তিনি প্রথমে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হলেও তখনই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মনস্থির করেন। কিন্তু আসামি এস কে সিনহা ওই সময় প্রধান বিচারপতি হওয়ার কারণে মামলা দায়ের থেকে পিছপা হন নাজমুল হুদা।

এদিকে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের হওয়া এই মামলাটি ইতোমধ্যে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দায়ের করা মামলাটি দুদক আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় এটি তাৎক্ষণিকভাবেই তদন্তের জন্য দুদকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

মামলার এজাহারে নিজের পরিচয় উল্লেখ করে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বয়স ৬৬+, পিতা-ললিত মোহন সিনহা, মাতা ধনবতী সিনহা, স্থায়ী সাং তিলকপুর, থানা কামালগঞ্জ, জেলা মৌলভীবাজার, হালে প্রবাসী, এর বিরুদ্ধে এই মর্মে এজাহার করছি যে, আমি বাংলাশে সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি, ঢাকা-১ নির্বাচনি এলাকা থেকে চারবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য। আমি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তিন বার মন্ত্রীত্বের মতো গুরুদায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছি। গত ২০০৭ সালে তথাকথিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে আমিসহ জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের চরিত্রহরণের লক্ষ্যে মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে একের পর এক মিথ্যা ফৌজদারি মামলা দায়ের করে হয়রানি করা নিত্য-নৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় আমার স্ত্রী ও আমার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা ফৌজদারি মোকদ্দমা দায়ের করা হয়। এমন-ই একটি মিথ্যা ফৌজদারি মোকদ্দমা হচ্ছে—মতিঝিল থানার মামলা নং ১০১ (তারিখ ১৮-৬-২০০৮)। যার এসিসিজিআর নম্বর হচ্ছে ১৪/২০০৮। ওই মামলায় সম্পূর্ণ উদ্ভট ঘটনার বর্ণনা করে আমার ও আমার স্ত্রীকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে আমি ও আমার স্ত্রী ওই মামলার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে যথাক্রমে ফৌজদারি বিবিধ মোকদ্দমা নং ২৩৪০৯/২০০৯ এবং নং ১৫৭৩৯/২০০৮ দায়ের করলে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ প্রাথমিক শুনানি শেষে ওই মামলা স্থগিত করার আদেশ দিয়ে মোকদ্দমাটি কেন কোয়াশড করা হবে না, তা জানতে চেয়ে একটি রুল ইস্যু করেন। পরবর্তী সময়ে ওই রুলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ রায় প্রচার করে মতিঝিল থানার মামলা নং-১০১, তাং ১৮০৬/২০১৮ মামলাটি কোয়াশড করে দেন। ওই রায়ের আদেশের ফলে আমি ও আমার স্ত্রী ওই মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাই। রায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যথাক্রমে লিভ টু আপিল নং ৮৬/২০০৭ এবং ৮৭/২০০৭ দায়ের করেন। ওই লিভ টু আপিলের শুনানি শেষে ০৭/০৬/২০১৭ তারিখে এই মামলার আসামি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রকাশ্য আদালতে ঘোষণা করেন যে, দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক আনীত ফৌজদারি লিভ টু আপিল তথা, লিভ টু আপিল নং ৮৬/২০১৭ ও ৮৭/২০১৭ মোকদ্দমা দু’টি ডিসমিস করা হলো।

এজাহারে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, ‘লিভ টু আপিল দুটির শুনানিকালে আমি ইন পারসন শুনানি করি এবং আমার পক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হিসেবে মো. ফিরোজ শাহ ও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হিসেবে মিসেস শাহনারা বেগম এবং দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট এ কে এম ফজলুল হক আপিল বিভাগে উপস্থিত ছিলেন। আপিল বিভাগের তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এমন প্রকাশ্য আদালতের ঘোষণার ফলে আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হই যে, আমি ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা মোকদ্দমাটির চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে। এইভাবে মিথ্যা ফৌজদারি মামলা হতে রেহাই পেয়ে আমি রাজনৈতিক কর্মাকাণ্ডে সর্বাত্মকভাবে নিয়োজিত হলে রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে আমি আমার চার বারের বিজয়ী নির্বাচনি অঞ্চল তথা, ঢাকা-১ সংসদীয় আসন হতে নির্বাচন না করে ওই আসনে আমার চাচা তথা—ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানকে ওই আসনে নির্বাচন করার জন্য আহ্বান জানাই। আমি নিজে যেহেতু সমগ্র বাংলাদেশের যেকোনও অঞ্চলে সমান জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সেহেতু আমি সুবিধাজনক কোনও আসন হতে নির্বাচন করার জন্য সক্রিয়ভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে থাকি। এমন পরিস্থিতিতে অপসাংবাদিকতার ধারক ও বাহক দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ২০১৮ সালের ৩০ মার্চে ৩ নং পাতায় ‘জামিন ছাড়াই বছর পার নজমুল হুদা ও স্ত্রীর’ শিরোনামে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে জড়িয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি আমার নজরে এলে আমি দেখতে পাই, সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, দুদকের দায়ের করা লিভ টু আপিল নম্বর ৮৬/২০১৭ ও ৮৭/২০১৭ মামলা দু’টি আপিল বিভাগ মঞ্জুর করে হাইকোর্ট ডিভিশনের ফৌজদারি বিবিধ মামলা নম্বর ১৫৭৩৯/২০০৮ এবং ২৩৪০৯/২০০৯ এ ঘোষিত ২০১৬ সালের ২৩ মার্চের রায় ও আদেশ লিভ টু আপিল দুটির মাধ্যমে বাতিল করা হয়েছে। মতিঝিল থানার মামলা ১০১ নম্বর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে। দৈনিক যুগান্তরের এমন প্রতিবেদন পড়ে আমি ও আমার স্ত্রী অত্যন্ত বিস্মিত হই। কেননা যেখানে প্রকাশ্য আদালতে আপিল বিভাগের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এই মামলার আসামি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সন্তুষ্ট হয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ‘দুদকের করা লিভ টু আপিল দুটি ডিসমিস করা হলো।’ এরপরে কীভাবে ওই আদেশ পাল্টে গিয়ে লিভ টু আপিল দুটি মঞ্জুর হয়।

এজাহারে নাজমুল হুদা বলেন, ‘আমি কাল বিলম্ব না করে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট সেকশন থেকে লিভ টু আপিল দুটির ২০১৭ সালের ৭ জুনের রায় ও আদেশের অনুলিপি তুলে দেখতে পাই যে, লিভ টু আপিল নং ৮৬/২০১৭ ও লিভ টু আপিল নং-৮৭/২০১৭ মঞ্জুর করা হয়েছে। অবিশ্বাস্য এ ঘটনায় আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি। আমি নিশ্চিত, আসামির একটি অবৈধ লেনদেনের প্রস্তাবে আমি রাজি না হওয়ায়ই আমাকে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। প্রকাশ থাকে যে, বিগত ২০ জুন ২০১৭ ইং তারিখে বেলা অনুমান ২ ঘটিকার সময় এই মামলার আসামি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার জমাদার আমার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০৩ নং কিউবিকেলসে এসে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেন যে, আমি যেন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করি। আমার সহকারী ফরহাদ ও জুনিয়ার অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান, ইকবাল আখঞ্জি ও অ্যাডভোকেট শিউলী খানম আমার ওই চেম্বারে উপস্থিত ছিলেন।’

নাজমুল হুদা বলেন, ওই দিনই আমি আসামির সুপ্রিম কোর্টস্থ খাস কামলায় বেলা অনুমান আড়াইটায় উপস্থিত হলে আমাকে একরাশ আশ্চর্যের মধ্যে ডুবিয়ে দিয়ে আসামি জানান, ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য মিসেস সালমা ইসলাম আসামিকে নগদ দুই কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন, যেন আমাকে নির্বাচেন অযোগ্য করার নিমিত্তে তিনি আমার যেকোনও একটি মামলায় সাজা নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, সালমা ইসলাম দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদকা ও মালিক। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার ক্ষেত্রে তার দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদটি আমি এবং আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ও বিচারপতি সিনহার যোগসাজসের ষড়যন্ত্রের অংশও বটে। আসামির নিকট থেকে এমন তথ্য প্রাপ্তি আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হলেও আসামি আরও জানান যে, তিনি আমার ও আমার স্ত্রীর মামলাগুলোয় আমাদের মুক্তির লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। তবে এর জন্য তাকে দুই কোটি টাকা ছাড়াও আপিল বিভাগে আমারই দেওয়া আড়াই কোটি টাকার একটি ব্যাংক গ্যারান্টির রিলিজ আবেদনের বিপরীতে ব্যাংক গ্যারান্টির অর্ধেক অর্থ ১ কোটি ২৫ লাখ টাকাও দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমি যদি এই টাকাগুলো না দেই, তাহলে ব্যাংক গ্যারান্টিতে উল্লিখিত ফৌজদারি আপিল নং ৪৮১৩/২০০৭, যেটাতে আমি ইতোমধ্যেই হাইকোর্ট থেকে খালাসপ্রাপ্ত হয়ে ব্যাংক গ্যারান্টি রিলিজ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি সেটির তিনি পুনঃশুনানি করবেন এবং ব্যাংক গ্যারান্টি রিলিজের পথ বন্ধ করে দেবেন। যদি আমি এমন দাবি না মানি তাহলে, আমার মামলাগুলো পুনরায় চালু হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

নাজমুল হুদা এজাহারে বলেন, আমি যেহেতু, সালমা ইসলামের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সেহেতু আমাকে সরিয়ে নিজের রাস্তা নিষ্কণ্টক করতে উক্ত সালমা ইসলাম, আসামির বরাবরে ওপরে উল্লিখিত টাকা উৎকোচ আকারে দেওয়ার প্রস্তাবনা করেছিলেন বটে। একজন দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতির নিকট হতে এরকম অবিশ্বাস্য আবদার বা প্রচ্ছন্ন হুমকির বিষয়টি আমাকে ভাবিত করে তোলে এবং আমি অত্যন্ত বিমর্ষ বদনে ওইদিন বেলা অনুমান তিন ঘটিকার সময় আমার সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ২০৩ নং কিউবিকেলসে এসে হতবিহ্বল হয়ে বসে থাকলে সেখানে উপস্থিত আমার জুনিয়র অ্যাডভোকেট আশানুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল আখঞ্জি আমার নিকট আমার এরূপ বিমর্ষতার কারণ জানতে চাইলে আমি তাদেরকে আসামি সিনহার ওপরে উল্লিখিত উৎকোচ দাবির বিষয়টি তাদের নিকট প্রকাশ করি এবং আসামির বিরুদ্ধে এরূপ আচরণের জন্য অভিযোগ দায়ের করার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে থাকি। তবে আমার ওপরে উল্লিখিত জুনিয়র দুটিসহ আমার শুনানুধ্যায়ীরা আমাকে এই বলে সতর্ক করেন যে, আসামি যেহেতু প্রধান বিচারপতির পদে আসীন, সেহেতু তার মতো এতে উচ্চপদস্থ ক্ষমতাবান ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমি যদি কোনও অভিযোগ আনয়ন করি, তা যত সত্যই হোক না কেন, তা আমার ও আমার পেশার জন্য ঝুকিপূর্ণ হবে। শুনানুধ্যায়ী ও জুনিয়রদের এই সুপরামর্শের ফলে আমি তখন কোনোরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকি। কিন্তু এভাবে নিশ্চুপ থাকাটাই আমার জন্য যেন কাল হলো। এছাড়া খালাসপ্রাপ্ত আমার সমস্ত মামলা প্রধান বিচারপতি সিনহার প্রতিহিংসার শিকারে পরিণত হলো। দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থাশীল থাকায় আমি আসামির এরূপ প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনয়ন ঝুকিপূর্ণ বিবেচনার আমলে না নিলে ও যখম আমি দেখতে পাই যে, প্রকাশ্য আদালতে মোকদ্দমা ডিসমিস হয়ে যাওয়ার পর অজ্ঞাত ও রহস্যজনক উপায়ে উক্ত মোকদ্দমা মঞ্জুর হয়ে যায়, তখন আমার বুঝতে বাকি থাকে না যে, আসামি তার দাবিকৃত দুই কোটি টাকা এবং ব্যাংক গ্যারান্টির এক কোটি পঁচিশ লাখ টাকা না পেয়ে লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন আমার পক্ষে দেওয়া খালাসের আদেশ রহিত করে আপিলটি পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন। আসামি আমার বিরুদ্ধে চলমান দুদকের মামলার শুনানির জন্য হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ নির্ধারিত থাকার পরও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে যুগান্তরের সম্পাদক সালমা ইসলামের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে আমার নির্বাচনি এলাকায় আমার ভাবমূর্তি ধ্বংস করার লক্ষ্যে যেন আমি সালমা ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারি বা আমার চাচাকে তথা দেশবরেণ্য ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমান সাহেবকে উক্ত সালমা ইসলামের বিরুদ্ধে সমর্থন না দিতে পারি এইরূপ অসৎ উদ্দেশ্যে আসামির নিকট আত্মীয়ের বেঞ্চে বিশেষ নির্দেশ দিয়ে অতি অল্প সময়ে আমাকে আমার সাক্ষী প্রমাণের সুযোগ না দিয়ে আমার হাইকোর্ট থেকে খালাস পাওয়া মামলা পুনঃশুনানি করে আমাকে সংসদ নির্বাচনে অযোগ্য করার লক্ষ্যে চার বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করান।

নাজমুল হুদার মামলায় বলা হয়েছে, ‘ঢাকা-১ নির্বাচনি এলাকার আমি টানা বিশ বছর ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত তিন বার প্রায় ১০ বছর মন্ত্রী থেকে আল্লাহর ইচ্ছায় অকল্পনীয় জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি বলেই বর্তমান এমপি সালমা ইসলামের জন্য আমার ভাবমূর্তি ধ্বংস করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছিল। অত্র মামলার আসামি সালমা ইসলামের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার মানসে দুর্নীতির মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি অযুহাতে দুই কোটি এবং ব্যাংক গ্যারান্টি রিলিজের জন্য উৎকোচ বাবদ আরও এক কোটি পঁচিশ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করে অপরাধজনক অসদাচরণ তথা দুর্নীতির মতো গুরুতর অপরাধ সংগঠন করেছেন যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধি আইনের অধীনে দণ্ডনীয় অপরাধ হচ্ছে বটে। আসামি একজন অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় আমি ঘটনা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরপরই এজাহার দায়ের মনস্থির করলেও বাস্তব পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় এজাহার দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হলো। অতএব বিধি অনুযায়ী অভিযোগটি আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা গেলো। সূত্র: বাংলাট্রিবিউন