বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল বিষয়ে আদেশ ১৪ অক্টোবর

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করা হবে কিনা এ বিষয়ে আগামী ১৪ অক্টোবর আদেশ দিবেন আদালত।

আজ রোববার (৭ অক্টোবর) ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড মো. আখতারুজ্জামান এ বিষয়ে আসামি এবং দুদকের পক্ষে আইনজীবীদের বক্তব্য শ্রবণ শেষে আদেশের এ তারিখ ঠিক করেন।

একইসঙ্গে একইদিন হাইকোর্টের কোনো স্থগিতাদেশ আদালতে দাখিল করতে না পারলে মামলাটির কার্যক্রম নিজ গতিতে চলবে বলেও আদেশ দিয়েছেন।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর স্থাপিত আদালতের বিচারক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ তিনজন আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল।

শুনানিকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেন। একই সঙ্গে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী অনুপস্থিতিতে বিচারের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা পেনডিং থাকায় যুক্তিতর্ক স্থগিতের আবেদন করেন।

শুনানিতে জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং জামিন বাতিল না হওয়ার কারণ হিবেবে তারা বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের শর্ত কোনোদিন ভঙ্গ করেন নাই। আর বর্তমানে তিনি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় আদালতের কাস্টরিতেই আছেন। চ্যারিটেবল মামলায় যেহেতু তিনি জামিনে আছেন। পূর্বে জামিনের কোনো শর্ত ভঙ্গ করেন নাই। জামিন বাতিল করার নতুন কোনো কারণ উদ্ভব হয় নাই। জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি না করার যুক্তিসংগত কোনো কারণও নাই।

অন্যদিকে দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল জামিন বাড়ানোর আবেদনের বিরোধিতা এবং জামিন বাতিলের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবীরা শুধু জামিন বাড়ানোর জন্যই আদালতে আসেন। যুক্তিতর্ক শুনানি করেন না। তাদের জন্যই মামলার ৪৫টি ধার্য তারিখ যুক্তিতর্ক শুনানি পেছানো হয়েছে। তারা শুধু আদালত থেকে জামিনের সুযোগ নিবেন, আদালতের চাহিদা পূরণ করবেন না। এ জন্য জামিন বাতিল করাই যুক্তিসংগত হবে।

মামলার জামিন বাতিল হয়ে কারাগারে থাকা অপর দুই আসামি বিএনপি নেতা সচিব হারিছ চৌধুরীর মামলার ঘটনাকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ এর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না পক্ষেও এদিন যুক্তি উপস্থাপন স্থগিত রাখার জন্য সময়ের আবেদন করেন।

মামলাটিতে এ আসামির পক্ষে চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে ২০১৭ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই আদালতে লিখিত যুক্তিতর্ক দাখিল করা হয়। তবে তার পক্ষে মৌখিক যুক্তি উপস্থাপন বাকি আছে। আইনজীবীরা চাইলে খালেদা জিয়ার উনুপস্থিতিতেই যুক্তি উপস্থাপন করতে পারবে বলে আদালতের আদেশ রয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর একই বিচারক বিচার বিলম্বের জন্য খালেদা জিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতে আসছেন না উল্লেখ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪০ (এ) ধারায় তার উপস্থিতি মুওকুফ করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুদকের এ সংক্রান্তে একটি আবেদন করা হয়।

২০১১ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক। এ মামলায় ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীও আসামি। তিনি পলাতক রয়েছেন।