‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বর্হিবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে’

সাউথ এশিয়ান ল’ ইয়ার্স ফোরামের সভাপতি ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন শব্দটির মধ্যে একটা সর্বজনীনতা বিদ্যমান। এই সর্বজনীনতাকে পুঁজি করে একটি স্বতঃস্ফূর্ত, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন গণতন্ত্রের ভিতকে মজবুত করে তোলে ও বর্হিবিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে।

রাজধানীর বনানীতে লন্ডন কলেজ অফ লিগ্যাল স্টাডিজের হল রুমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের ভাবনা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় গতকাল শুক্রবার (১২ অক্টোবর) তিনি এসব কথা বলেন।

অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন বলেন, দেশের পরিস্থিতির দৃশ্যপট বদলে দেয় নির্বাচন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে সরকারের উচিত নিরপেক্ষ হয়ে সব পক্ষকে সমান তালে তাদের কর্মসূচি নিয়ে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। মনে রাখা প্রয়োজন, ছোট্ট একটি ভুল ভবিষ্যতে বড় ভুলকে উৎসাহিত করে। ফলে দেশ ও সমাজের সর্বনাশে তা সহায়ক হয়।

এই আইনজীবী আরও বলেন, আমরা চাই অংশগ্রহণমূলক ও স্বতঃস্ফূর্ত নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী দলের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। এতে যদি আওয়ামীলীগ সরকার আবার ক্ষমতায় আসে জনগন এই রায় মেনে নিবে।

অ্যাডভোকেট শেখ সালাহ্উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার নিরপেক্ষ ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন। সাধারণত দেখা যায়, যারা ক্ষমতায় থাকে তারা নিজের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। স্বাধীন নাগরিক হিসেবে যদি নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ না করা যায় তাহলে সেই নির্বাচনকে স্বচ্ছ বলা যাবে না। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দক্ষ নির্বাচন কমিশন একান্ত প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচনের ভোটাররা যেন অবাধে ভোট দিতে কেন্দ্রে আসতে পারেন, সে নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, নির্বাচন মানে শুধু রদবদল বা পরিবর্তন নয়। এটির সামাজিক বাস্তবতা অনেক। এটি সমাজ নির্মাণের একটি শক্তিশালী ভিত্তি।

সাউথ এশিয়ান ল’ ইয়ার্স ফোরামের সভাপতি আরও বলেন, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য দাগী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চাঁদাবাজি রোধ, কালো টাকার ছড়াছড়ি ইত্যাদি রোধ করে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে না পারলে কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যাবে না। সরকারকে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। তারা যেন তাদের প্রয়োজন মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেদিকে সরকারকেই খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের ইচ্ছার ওপরই নির্ভর করে একটি অবাধ, সুষুম ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আর সরকার বা আমাদের দক্ষ নির্বাচন কমিশন সেটা চাইলেই পারে- এ বিশ্বাস আমাদের আছে। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করে নেবে। এতে নির্বাচনের আগেই সে আইনশৃঙ্খলাকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে। আর যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী নামানো যেতে পারে। এ জন্য সবাই মিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে অর্থাৎ রাজনৈতিক দল, শিক্ষক, ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, সুধী সমাজের প্রতিনিধি- সবাইকে নিয়ে বসে ঠিক করতে হবে নির্বাচনের সময় কিভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সরকারের সদিচ্ছার ও বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছার ওপরই তা নির্ভর করছে। আশা করি বিষয়টি সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা ভেবে দেখবেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার মো: তৌফিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ এনামুল হক এনাম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলমগীর খান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম আকাশ প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি