বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ফাইল ছবি)

খালেদার জামিন বাতিল হবে কি না জানা যাবে ১৬ অক্টোবর

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না- এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ ছাড়াও মামলাটির রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছে, সে বিষয়ে আদেশের জন্যও একই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আজ রোববার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৫ নম্বর অস্থায়ী বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।

এর আগে ৭ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না, ৩০ সেপ্টেম্বর তা জানতে চেয়েছিলেন আদালত। এ বিষয়ে জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল আজ। সে অনুযায়ী খালেদার আইনজীবীরা জবাব দাখিল করেন। এ ছাড়াও মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদন করেছিলেন, সে বিষয়েও আদেশ দেয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল আজ।

আজ খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া আদালতে আবেদন করেন। আবেদনে বলেন, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার কার্য চলবে কি না, এ বিষয়ে যে রিভিশন দাখিল করা হয়েছে, তা আদালতে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। আমাদের সময় দেয়া হোক।

এদিন আদালতে তিনটি আবেদন দাখিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহম্মেদ তালকুদার। তারা খালেদা জিয়ার জামিন বৃদ্ধি, যুক্তিতর্ক মুলতবি রাখার আবেদন ও কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দাখিল করেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার শুনানিতে বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাকে হাসপাতলে ভর্তি করানো হয়েছে। তিনি আপনার কাস্টডিতেই আছেন। জেলে থাকা আসামির জামিন বাতিল করার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া কখনও জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেননি। তাই তার জামিন বৃদ্ধি করা হোক। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে মামলার বিচার কার্যক্রম চলবে বলে আপনি যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে একটি রিভিশন মামলা দায়ের করেছি। তা শুনানির জন্য অপেক্ষায় আছে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে একটি যুক্তিসঙ্গত সময় দেয়া হোক।

অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তার জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তারা (খালেদার আইনজীবী) কোনো যুক্তিসঙ্গত জবাব দাখিল করেননি। তাই তার জামিন বাতিল করা হোক। মামলার কার্যক্রমের সমাপ্ত চেয়ে রায়ের দিন ধার্যের যে আবেদন ছিল, তারও আদেশ দেয়া হোক।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য ১৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।

মামলার অপর দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের আইনজীবীরা বলেন, বিচারক বদলি চেয়ে যে আবেদন-সংক্রান্ত একটি রিভিশন ফাইল উচ্চ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। রিভিশন ফাইলটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে একটি যুক্তিসঙ্গত সময় দেয়া হোক।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

উল্লেখ্য, দুদকের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।