পশ্চিমবঙ্গে বিনামূল্যে আইনি সেবার প্রচারণায় মানুষের দ্বারে দ্বারে বিচারক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অন্তর্গত মেদিনীপুর বিভাগের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেশ কিছু এলাকায় বিনামূল্যে আইনি সেবা পৌঁছে দিতে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেনিং এ অংশ নিলেন বিচারক নিজেই। খবর কলকাতা২৪×৭ এর

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহলে আইনি পরিষেবা পৌঁছে দিতে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেনিং চালালেন স্বয়ং বিচারক৷মূলত বিনামূল্যে আইনি পরিষেবার উদ্দেশ্যেই এই ক্যাম্প বলে জানালেন বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ৷এই পরিষেবা যাতে বিনামূল্যে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই উদ্দেশ্যেই জঙ্গলমহলে ক্যাম্পেনিং চালিয়েছেন বিচার বিভাগীয় কর্মীরা৷

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে গত ৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে গতকাল ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এই ক্যাম্প চলেছে৷যার মূল উদ্দেশ্যই হল জেলার আইনি পরিষেবা সঠিক ভাবে পৌঁছে দেওয়া৷পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করা৷

এ সময় পশ্চিম মেদিনীপুরের জঙ্গলমহল এলাকায় ক্যাম্পেনিং-এ অংশ নিয়েছেন ডি.এল.এস-এর বিচারক আয়েত্রী মান্না চৌধুরী৷তিনি চাঁদরা, দেপাড়া, ধেড়ুয়া সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে লোধা শবর আদিবাসীদের সঙ্গে আইনি পরিষেবা নিয়ে আলোচনায় বসেন৷

তিনি জানান, বিনামূল্যে আইনি সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই তাদের এই ক্যাম্পেন৷মানুষের কোথায় সমস্যা, আইনি মামলা-মোকদ্দমায় কোথায় অসুবিধা সেসব সমস্যা সমাধানে তাদের কাছে আসা৷এই দিন বিভিন্ন জায়গায় জায়গায় ক্যাম্পেনের মাধ্যমে জঙ্গলমহলে ভালোই সাড়া পান এই সচেতনতা ক্যাম্প৷

বিচারক আয়েত্রী মান্না বলেন, ‘‘কিভাবে মেয়েরা সঠিক আইনি পরিষেবা পেতে পারে, কিভাবে কোনও আইনি মামলায় সহজে বিনামূল্যে লড়তে পারবে, কিভাবে তাদের হয়ে বিনা পয়সায় উকিল ঠিক করা যাবে৷এই ভাবেই তারা গ্রামের মানুষদের বোঝাতে থাকেন৷ তবে এরই মাঝে এতে একটা ভালো দিকও তারা লক্ষ্য করেন জঙ্গলমহলে৷

বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষেরা আইনি পরিষেবা পেয়ে স্বাভাবিক ভাবে খুশি৷শুধু জঙ্গলমহল নয়, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অংশ খড়গপুর, ঘাটাল চন্দ্রকোনা রোড, কেশপুর সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চলছে এই আইনি সচেতনতা ক্যাম্প৷ সেই ক্যাম্পের অন্যতম অংশ হল এই জঙ্গলমহল৷এদিন ডি.এল.এস-এর বিচারক নিজেই যান ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন৷ আট থেকে আশির সকলকে বোঝান সমস্যা ও তার সমাধানের কথা৷ এদিন বিচারককে সামনে পেয়ে তাদের সমস্যার কথা উগরে দেন এলাকাবাসী৷

উল্লেখ্য, আইনি পরিষেবা সাধারণ মানুষ সহজে পায় ন৷আইনের বিভিন্ন মামলায় তারা সহজেই জড়িয়ে পড়েন এবং তা থেকে বের হওয়ার উপায় তারা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারেন না৷এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, কন্যা ভ্রূণ হত্যা, বিবাহের পর মেয়েদের প্রতি অত্যাচার, বাবা-মাকে অত্যাচার সহ বিভিন্ন মামলায় সাধারণ মানুষ কাকে জানাবেন, কোথায় জানাবেন, এর খরচা কিভাবে সামলাবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না৷

সেই দিক দিয়ে এই আইনি সচেতনতা ক্যাম্প মানুষের কাছে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে বলে মনে করছে সবাই৷ মূলত এর উদ্দেশ্যই হল পিছিয়ে পড়া মানুষদের কাছে আইনি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া৷ সঙ্গে উভয়পক্ষের সম্মতিতে যে কোনও মামলার বিনামূল্যে নিষ্পত্তি৷ এদিন বিচারকের সঙ্গে ছিলেন পার্শ্বআইনি স্বেচ্ছা-সেবকরা৷