ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারী ও হাইকোর্ট

অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনার কারণ নির্ণয় করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠনের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) বিষয়টি আদালতের নজরে আনার পর বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয় করে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন বিষয়েও এ কমিটি কাজ করবে। কমিটিতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের নিচে নয় এমন একজন প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, মনোবিদ ও আইনবিদকে রাখতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর সকালে আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, জেসমিন সুলতানা।

আদেশের পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে অতিরিক্তি শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক মাসের মধ্যে এই কমিটিকে দু’টি প্রতিবেদন দিতে বলেছে আদালত। একটি হচ্ছে, জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে তারা একটি প্রতিবেদন দেবে। আরেকটি হচ্ছে, অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

গত সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর শান্তিনগরে গলায় ফাঁস দিয়ে অরিত্রী অধিকারী (১৫) নামে ভিকারুননিসার এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেন। অরিত্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শাখার নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন।

তার বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, অরিত্রীর স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (০২ ডিসেম্বর) পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের স্কুলে যেতে বলে। স্কুলে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জানায়, তার মেয়ে পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে নকল করছিল। তাই তাকে টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ খবর শোনার পর স্কুল থেকে অরিত্রী বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনায় পৃথক দু’টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার (০৪ ডিসেম্বর) পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। একইসঙ্গে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।