ন্যাচারাল জাস্টিস মানে কি প্রকৃতির বিচার?

বেল্লাল হোসাইন : 

আইন জানা ও অজানা অনেক লোককেই একটা কমন কনসেপচুয়াল ভুল করতে দেখা যায়, সেটা হলো ন্যাচারাল জাস্টিস সম্পর্কে ভুল তথ্য। অনেকেই মনে করেন কেউ কোনো পাপ কাজ করলে স্রষ্টার পক্ষ থেকে তার প্রতি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা যেমন রোগে ভোগা, ব্যবসায় লোকসান, মামলা বা বিপদে পরা, সন্তান প্রতিবন্ধী বা অবাধ্য হওয়া ইত্যাদি হলো ন্যাচারাল জাস্টিস! আবার যারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী না তাদের দৈব ব্যাপারগুলোকে প্রকৃতির কাজ বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে দেখা যায়।

আসলে ন্যাচারাল জাস্টিস কী?

আইনের প্রাচীন উৎসগুলোর মধ্যে অনেক ম্যাক্সিম বা নীতি/মতবাদ আছে। সেই নীতির আলোকে আধুনিক কোডিফাইড আইন প্রণয়ন করা হয়।

সেই ম্যাক্সিমগুলোর উল্লেখযোগ্য দুটি নীতি হলো

১. কাউকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তার বিচার করা যাবে না বা শাস্তি দেয়া যাবে না।

২. কেউ নিজের মামলায় নিজেই বিচারক হতে পারবে না।

এই নীতির পরিবর্তন করে কোনো বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ন্যায়বিচার মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার যৌক্তিক সন্দেহ তৈরি হবে। বিচারপ্রার্থীর কাছেও এমন বিচার গ্রহণযোগ্যতা হারাবে।

উপর্যুক্ত, দুটি নীতিমালার সমন্বয়ই হলো ডকট্রিন অব ন্যাচারাল জাস্টিস। এর বাইরে প্রচলিতভাবে আমরা যা বলি তাকে বড়জোর আল্লাহর বিচার বা প্রকৃতির প্রতিশোধ ইত্যাদি বলতে পারি। এর সাথে আইনের কোন সম্পর্ক নেই।

লেখক : আইনজীবী ও সমাজকর্মী।