গার্ড অব অনার ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাকে দাফন, ক্ষমা চাইলেন ইউএনও
সুপ্রিম কোর্ট

চিকিৎসার নামে মানুষের জীবন নিয়ে বাণিজ্য করা যাবে না

চিকিৎসার নামে মানুষের জীবন নিয়ে কোনো ধরনের বাণিজ্য করা যাবে না বলে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের উদ্দেশে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে বাণিজ্য হচ্ছে। সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে চিকিৎসা খাতে। কিন্তু সাধারণ মানুষ অসুস্থ হয়ে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না, প্যারাসিটামল ছাড়া ওষুধও পাচ্ছেন না। মানুষের জীবন নিয়ে বাণিজ্য করা যাবে না। সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে যাতে কেউ ব্যবসা করতে না পারে- এজন্য চিকিৎসকদের প্র্যাকটিসের বিষয়ে একটি গাইড লাইন থাকা উচিত।

সরকারি চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দিয়ে করা আইনটি চ্যালেঞ্জ করে এবং সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধে দায়ের করা রিটের শুনানিতে আদালত এসব কথা বলেন।

এ সময় সেবামূলক পেশা হিসেবে চিকিৎসা নিয়ে বাণিজ্য যেন মুখ্য না হয় বলেও পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এসব কথা বলেন।

পরে আদালত সরকারি চিকিৎসকদের জন্য ‘প্র্যাকটিসিং গাইড লাইন’ তৈরি করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বাধীন মেডিকেল কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন

একইসঙ্গে, সরকারি চিকিৎসকদের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের অনুমতি দিয়ে করা আইনটি কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) সভাপতি এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতিকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আবদুস সাত্তার পালোয়ান তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান, অ্যাডভোকেট সুজাদ মিয়া, অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল হক ও অ্যাডভোকেট মো. কাউছার উদ্দিন মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার)।

পরে আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান সাংবাদিকদের জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সরকারি চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ এ আদেশ দিয়েছেন।

তিনি জানান, সারাদেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যে চিকিৎসা ব্যবস্থা আছে- সেটি আজ কলাপস হয়ে গেছে। আমরা আদালতে বলেছি, সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা এভাবে চলতে পারে না। মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো- সরকারি চিকিৎসকেরা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেন। প্রাইভেট প্র্যাকটিস যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে সরকারি চিকিৎসায় একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। আদালত আমাদের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন এবং নির্দেশনা দিয়েছেন।

‘ডাক্তার ব্যক্তিগত চেম্বারে, হাসপাতালে রোগীর মৃত্যু’ শিরোনামে গত ২৯ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আজ এ আদেশ দেন।