ভারতীয় তরুণীর যৌতুক মামলায় বাংলাদেশি যুবক কারাগারে
কারাগার (প্রতীকী ছবি)

দুদকের মামলায় ব্যাংক কর্মকর্তার যাবজ্জীবন

ফরিদপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে জরিমানাসহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের হাকিম মো. মতিয়ার রহমান এ রায় দেন।

রায় ঘোষণার সময় ওই ব্যাংক কর্মকর্তা পলাতক ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ব্যাংক কর্মকর্তার নাম শামসুর রহমান। তিনি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা শাখায় সহকারী কর্মকর্তা কাম ক্যাশ পদে কর্মরত ছিলেন। তবে মামলা হওয়ার পর তাঁর চাকরি চলে যায় এবং তিনি আত্মগোপন করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২০ মার্চ শামসুর রহমান জোহরের নামাজ পড়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান। পরে তিনি আর ব্যাংকে ফিরে আসেননি। ওই দিন বিকেলে ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় অতিরিক্ত চাবি দিয়ে ক্যাশ খুলে হিসাব মিলিয়ে দেখেন, নির্দিষ্ট টাকার চেয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা কম আছে।

ওই দিনই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ডামুড্যা থানায় শামসুর রহমানকে আসামি করে একটি মামলা করেন। ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর মামলাটি তদন্ত করার দায়িত্ব নেন দুর্নীতি দমন সমন্বিত ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল।

তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, শামসুর রহমান ওই ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব গ্রহীতা নুর জাহানের ৩০ হাজার টাকা, মতি ফকিরের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও চান মিয়ার ৩২ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

২০১৩ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপসহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল গ্রাহক ও ব্যাংকের মোট ৪ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে শামসুর রহমানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান জানান, আজ আদালত দুটি ধারায় শামসুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন। ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে শামসুর রহমানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা আত্মসাতের সমপরিমাণ ৪ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শামসুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাঁকে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

আইনজীবী মো. মজিবুর রহমান আরও জানান, শামসুর রহমানকে দুটি সাজা একই সঙ্গে ভোগ করতে হবে। তবে শামসুর রহমান ২০১২ সালের ২০ মার্চ থেকে পলাতক রয়েছেন। ঘটনার দিনই তাঁকে ব্যাংক থেকে বরখাস্ত করা হয়।