চট্টগ্রাম আদালতে পুলিশের মালখানায় চুরির পর নতুন তালা দিয়ে গেল চোর

চট্টগ্রাম আদালতে জেলা পুলিশের মালখানায় (বিভিন্ন মামলার জব্দ করা আলামত) চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর চুরির পর মালখানার দরজায় নতুন তালা লাগিয়ে দিয়ে গেছে।

আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় মালখানায় তালা খুলতে গিয়ে গতকাল সোমবার (১৮ মার্চ) চুরির ঘটনাটি জানাজানি হয়। তবে কী পরিমাণ আলামত খোয়া গেছে, তা জানাতে পারেনি পুলিশ। কী কী আলামত খোয়া গেছে মালখানায় থাকা আলামতগুলো তালিকা ধরে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।

এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন জেলা পুলিশের খলিলুর রহমান ও মো. মনিরুজ্জামান।

পুলিশ সূত্র জানায়, এই মালখানায় অস্ত্র, গুলি, টাকা, মাদক, সোনাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মামলার এক লাখেরও বেশি আলামত রয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরেআলম মিনা রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। কী কী আলামত খোয়া গেছে মালখানায় থাকা আলামতগুলো তালিকা ধরে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। তার আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। কিছু টাকা খোয়া গেছে। তবে পরিমাণটি বলা যাচ্ছে না।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার তদন্তে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। কেন, কী কারণে এই ঘটনা তা তদন্ত করা হচ্ছে। আশা করা যায় জড়িত ব্যক্তিরা ধরা পড়বে।

চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পরিদর্শক বিজন কুমার বড়ুয়া জানান, সোমবার সকালে মালখানার কর্মচারীরা এসে দেখেন দরজায় অন্য তালা দেওয়া। তাঁদের লাগানো সিলগালা করা তালাগুলো নেই। বিষয়টি মালখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ভেতরে থাকা আরেকটি দরজা খোলা পাওয়া যায়। আলামতগুলো একটু এলোমেলো পাওয়া যায়।

সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত জেলা মালখানার দরজার বাইরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মকর্তারা ঘিরে রাখেন। তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের দল মালখানার ভেতরে ঢোকে। ওই সময় তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। সিআইডির ক্রাইম সিন দরজা ও মালখানার ভেতর থেকে আঙুলের ছাপ নেয়। এরপর একে একে নগর ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। চট্টগ্রাম মুখ্য বিচারিক হাকিম বেগম কামরুন নাহার রুমিসহ কয়েকজন বিচারককে বিকেলে মালখানা পরিদর্শন করতে দেখা গেছে। তবে কী কী আলামত খোয়া গেছে, এই বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেননি।