মাহবুবে আলম

‘সুবর্ণচরের গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা রুহুল আমিনের জামিন নজিরবিহীন ঘটনা’

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, ‘সুবর্ণচরের গণধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা রুহুল আমিনের জামিন নজিরবিহীন ঘটনা। যেখানে পুরো জাতি ধর্ষণ মামলার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন এবং ক্ষুব্ধ, সেখানে জামিন হওয়ায় সবাই হতবাক।’

রুহুল আমিনের জামিন বাতিলের আদেশের পর শনিবার দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।

বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হবে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল। একই সঙ্গে কোনো মামলায় জামিন নেয়ার জন্য এক কোর্টের কথা বলে অন্য কোর্টে শুনানি করা ঠিক নয়। এ ঘটনা আদালত অবমাননার শামিল বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের প্রধান এ আইন কর্মকর্তা।

আইনজীবী মাহবুবে আলম বলেন, ‘সুবর্ণচরের আলোচিত গণধর্ষণ মামলার আসামি মো. রুহুল আমিনের জামিনের জন্য তার একজন আইনজীবী হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সে আইনজীবীর নাম আশেক ই রসুল। তিনি আমাদের অফিসকে (অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়) জানিয়েছিলেন তার আবেদনটি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চে শুনানি হবে।

কিন্তু আবেদনটি বিচারপতি মামনুন রহমানের বেঞ্চে শুনানি করেন এবং এ মামলার স্বীকারোক্তিমূলক জবানববন্দি ও ভিকটিমের জবানবন্দি সন্নিবেশিত না করে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে ওই আইনজীবী জামিন নেন। পরে আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে সংশ্লিষ্ট কোর্টের বিচারপতিদের যখন বিষয়টি অবহিত করা হয় তখন আজ সকালে তারা চেম্বারে (খাস কামরায়) বসে এ জামিন আদেশটি রিকল করে বাতিল করেন। ফলে ওই আসামিকে দেয়া পূর্বের জামিন আদেশটি বাতিল হয়ে গেলো। তার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আর কার্যকর থাকল না। এখন আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেব সে যাতে জেল থেকে বের হতে না পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটা খুবই ঘৃণ্য তৎপরতা। আমরা বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনব যে, কিছু কিছু আইনজীবী এক আদালতের কথা উল্লেখ করে অন্য আদালত থেকে শুনানি করেন। বিচারপতিদের কাছেও আমাদের আবেদন তারা যখন মামলার পিটিশন দেখেন তখন তারা যেন লক্ষ্য রাখেন কোন আদালতে কয় নাম্বার কোর্টের আবেদন করে পরে আরেক কোর্টে শুনানি করতে এসেছেন। এটা এক ধরনের আদালতের সঙ্গে প্রতারণা ও আদালত অবমাননার শামিল।’

ওই আইনজীবীর বিষয়টি প্রথমে প্রধান বিচারপতির নজরে আনব এরপর প্রয়োজনে বার কাউন্সিলের নজরে আনা হবে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

মাহবুবে আলম আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘যদি আদালতের সামনে সব তথ্য-প্রমাণ সন্নিবেশিত হতো তবে অবশ্যই আদালত জামিন দিতেন না। আদালতকে ভুল বুঝিয়ে জামিন নেয়া হয়েছিল, যা আদালত বুঝতে পেরে আদেশটি রিকল করে জামিন বাতিল করেছেন।’

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘আমি আদালতের কাছে ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারির আরজি জানাব। ২৫ মার্চ এ আবেদন করব। আদালতের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কারণে তারা বিষয়টি অনুধাবন করে বন্ধের দিনেও আদেশটি বাতিল করেছেন। তবে এ মূহূর্তে জেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিতে হবে সে যাতে জেল থেকে বের হতে না পারে।’