বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে হাইকোর্টে রিট

শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে হাইকোর্টে একটি আবেদন আসার পর ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে আবেদনকারীদের বক্তব্য লিখিত আকারে গ্রহণ করার জন্য বলেছেন আদালত।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) এ আবেদন নিয়ে যান আবেদনকারীদের আইনজীবী।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন মো. খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম।

পরে মোহাম্মদ সাইফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবুল বাশার মুহম্মদ রুহুল হাসান একটি রিট পিটিশন নিয়ে আসেন কোর্টে। যে, শবেবরাতের তারিখ নিয়ে গণ্ডলোল দেখা দিয়েছে। দ্বিমত দেখা দিয়েছে। তার পক্ষে তার আইনজীবী খুরশীদ আলম স্যার আবেদনটি উপস্থাপন করেন কোর্টে। এবং আদালতে পারমিশন চান’।

আদালত বলেন যে, এটা ধর্মীয় সেনসেটিভ ইস্যু। এটা আদালতের বিষয়বস্তু না করাই ভালো। আপনাদের (আবেদনকারীদের) বক্তব্য আপাতত ইসলামিক ফাউন্ডেশনে লিখিত আকারে জমা দেন। তারা যদি কনসিরাডেশনে না নেন, ১৭ তারিখে। তাহলে আমাদের কাছে আসবেন। আমরা তখন ব্যবস্থা নিবো।

তিনি আরও বলেন, আদালত আমাকে বলেছেন ডিজিকে (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) জানাতে, যেন আবেদনকারীদের আবেদন গ্রহণ করেন। এবং ১৭ তারিখের মিটিংয়ে আলোচনায় নেন।

খুরশীদ আলম খান জানান, আদালত অপেক্ষা করতে বলেছেন ১৭ তারিখ পর্যন্ত। এর মধ্যে আবেদনকারীদের লিখিত আবেদন নিতে বলেছেন।

গত ৬ এপ্রিল জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি সভা করে জানিয়েছিলো, ওই দিন দেশের আকাশে কোথাও শাবান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে ৮ এপ্রিল থেকে শাবান মাস গণনা শুরু হবে এবং ২১ এপ্রিল দিনগত রাতে পবিত্র লায়লাতুল বরাত পালিত হবে।

তবে ‘মজলিসু রুইয়াতিল হিলাল’ নামে একটি সংগঠনের দাবি, সেদিন খাগড়াছড়িতে চাঁদ দেখা গেছে। তাদের দাবি অনুযায়ী, ২০ এপ্রিল দিবাগত রাতে পবিত্র লায়লাতুল বরাত পালিত হওয়ার কথা। এ নিয়ে বিতর্ক এড়াতেই জরুরি বৈঠক ডাকে সরকার।

১৩ এপ্রিল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটাতে ১১ সদস্যের সাব-কমিটি গঠন করে করা হয়। এ কমিটি শবেবরাতের আগে আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে।

প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ জানান, বিষয়টা যেহেতু ধর্মীয়, যারা আমাদের দেশে সব চাইতে জ্ঞানবান আলেম, তাদের ওপর দায়িত্বটা দেওয়া হয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।

কমিটির প্রধান হিসেবে রয়েছেন বিশিষ্ট আলেম রাজধানীর মিরপুরের মারকাজুদ দাওয়ার শিক্ষাপরিচালক মাওলানা মুফতি আব্দুল মালেক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ, ফরিদাবাদ মাদ্রাসার মুহতামিম ও বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমীন, শায়খ যাকারিয়া (রহ.) ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম (মসজিদুল আকবর কমপ্লেক্স) মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, তেজগাঁও মদীনাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক আল আযহারী, লালবাগ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মুফতি মো. ফয়জুল্লাহ, লালবাগ মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মাওলানা ইয়াহ্ইয়া, মোহাম্মদপুর জামেয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি মো. মাহ্ফুজুল হক ও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।।