উচ্চ আদালত

ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি নির্ণয়ে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

বিগত ২০ বছরে ব্যাংকের ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রস্তুত এবং বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে কী পরিমাণ অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছেন আদালত।

এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল ) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিগত ২০ বছরে ব্যাংকের ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা প্রস্তুত করে তা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে কী পরিমাণ অনিয়ম, দুর্নীতি হয়েছে— তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন আদালত।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।

কিন্তু ওইসব তালিকা দাখিল না করায় তার অগ্রগতি জানাতে আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) আদেশ দেন হাইকোর্ট।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাংকিং খাতে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, বিভিন্ন প্রাইভেট ও পাবলিক ব্যাংকে ঋণের ওপর সুদ মওকুফের বিষয় তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।

বাংলাশে ব্যাংকের গভর্নর ছাড়াও নোটিশপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন— মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং আইন মন্ত্রণালযের সচিব।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইআরপিবি) পক্ষে এ নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে সাত দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের বিষয় তদন্ত ও প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য ১৯৫৩ সালের ইনকোয়ারি কমিশন অ্যাক্টের অধীনে একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই নোটিশের কোনও সদুত্তর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন। রিটে একটি কমিশন গঠন করে ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারকারীদের তালিকা করতে নির্দেশ দেন আদালত।