উচ্চ আদালত
উচ্চ আদালত

ময়নাতদন্তে তথ্য বিকৃতি : চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

সংঘবদ্ধ ধর্ষণ শেষে হত্যার ঘটনায় করা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিপরীতধর্মী তথ্য দেন পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম ও মেডিক্যাল অফিসার রেজাউর রহমান। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ বুধবার (২২ মে) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।

এর আগে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিপরীতধর্মী তথ্য দেওয়ায় পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই আদেশ অনুযায়ী বুধবার (২২ মে) আদালতে হাজির হয়ে সিভিল সার্জন ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান।

তবে আদালত ক্ষমা না করে চিকিৎসককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এভাবে যদি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেন, তাহলে জাতির কাছে কী বার্তা যায়? এভাবে রিপোর্ট দেওয়ার কারণে একটা মামলার বিচার প্রভাবিত হয়, এমনকি রায় ভিন্ন হয়, যেখানে বাদী ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়। যেখানে মেয়েটির মা ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগে মামলা করেছেন, সেখানে চিকিৎসক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কীভাবে অসঙ্গতিপূর্ণ মন্তব্য করেন?’

এরপর আদালত সিভিল সার্জনের ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দেন এবং সিভিল সার্জন ডা. শাহ মো. মোজাহিদুল ইসলাম ও মেডিক্যাল অফিসার রেজাউর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৩) ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর নিজ বাড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ছাত্রীর মা প্রথমে থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি। পরে গত ৩ জানুয়ারি পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়। মেয়েটির মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন।

পরে ওই মামলার আসামি দানেশ চৌকিদার হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। ওই জামিন আবেদনে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিপক্ষ।

ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. রেজাউর রহমান প্রতিবেদনে লিখেছেন, গলায় দাগ রয়েছে, শ্বাসরোধে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে। তবে এটা দুর্ঘটনাজনিত কারণে হতে পারে। এই রিপোর্টের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সিভিল সার্জন। পরে প্রতিবেদনের বিষয়ে সিভিল সার্জনকে তলব করেন হাইকোর্ট।