বাংলাদেশের উচ্চ আদালত

ভূমধ্যসাগরে ৩৭ জনের মৃত্যু: জড়িতদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ, জানতে চান হাইকোর্ট

লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এক সপ্তাহের জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার (২৪ জুন) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে মৌখিকভাবে এ নির্দেশ দিয়ে রিট আবেদনের শুনানি আগামী এক সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) রেখেছেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এমদাদুল হক সুমন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘জড়িতদের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা এক সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ কাজের সঙ্গে জড়িত সিলেট ও নোয়াখালীর ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে কিনা, এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের বিষয়টি জানাতে হবে।

গত ১৭ জুন লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে ৩৭ জন বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় তাদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি করে মোট ৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত পাচার সংক্রান্ত ঘটনা তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ এমদাদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন।

এছাড়া, রিটে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ২০১২ সালের মানবপাচার দমন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান নিশ্চিত করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

রিটে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রকে আইনের আওতায় আনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি রিট আবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি ও মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারিরও আরজি জানানো হয়।

রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজি, সিলেট ও নোয়াখালীর এসপিকে বিবাদী করা হয়।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৯ মে ভূমধ্যসাগরে তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৩৭ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওইসব প্রতিবেদনে প্রতারক ট্রাভেল এজেন্সি, ১৫ পাচারচক্র ও নোয়াখালীর তিন ভাইয়ের অবৈধভাবে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার তথ্য ওঠে। এরপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।