ওয়াসা

ওয়াসার পানি পরিশোধনে গৃহীত পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট

ঢাকা ওয়াসার ১০টি মডস জোনের মধ্যে চারটি জোন এবং সায়েদাবাদ ও চাঁদনিঘাট এলাকা থেকে সংগৃহীত আটটি নমুনা পানি পরীক্ষায় দূষণের তথ্য পাওয়া যায়। এ কারণে পানি পরিশোধনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে গৃহীত পদক্ষেপগুলো আদালতকে জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসার কয়েকটি নমুনা পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পর আজ রোববার (৭ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনটি দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। এসময় রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৩ জুলাই ঢাকা ওয়াসার ১০টি মডস জোনের মধ্যে চারটি জোন এবং সায়েদাবাদ ও চাঁদনিঘাট এলাকা থেকে সংগৃহীত আটটি নমুনার পানিতে দূষণের তথ্য প্রতিবেদন আকারে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে দাখিল করা হয়। এলাকার পানিতে ব্যাকটেরিয়া, উচ্চ মাত্রার অ্যামোনিয়া পাওয়া গেছে এবং কিছু কিছু নমুনাতে মলের অস্তিত্বও পাওয়া গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গত ২১ মে এক আদেশে ঢাকা ওয়াসার পানির উৎস, ১০টি বিতরণ জোন, গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং দৈবচয়নের ভিত্তিতে ১০টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ৩৪টি স্থান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা আইসিডিডিআরবি, বুয়েট ও ঢাবি অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে আটটি নমুনায় দূষণ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর বিশ্বব্যাংক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষ অনিরাপদ উৎসের পানি পান করে। ৪১ শতাংশ পানির নিরাপদ উৎসগুলোতে রয়েছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া। ১৩ শতাংশ পানিতে রয়েছে আর্সেনিক। পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা পানিতে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৮২ শতাংশ। পরে পত্রিকায়ও এসব তথ্য প্রকাশিত হয়। সেই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।

এরপর ওই রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ নভেম্বর রাজধানী ঢাকায় পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

পরে ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে আছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং আইসিডিডিআরবি’র প্রতিনিধিরা। এরপর ওই কমিটিকে গত ২১ মে পানি পরীক্ষার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।