এডিস মশা নির্মূল ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে আইনি নোটিশ

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে ও এই রোগের বাহক মশা নির্মূলে সরকারের চার মন্ত্রণালয় ও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনসহ বাংলাদেশের জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটরকে আইনী নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

জনস্বার্থে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ প্রেরণ করেন।

নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন- প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়; উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশের জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর।

আইনী নোটিশের বক্তব্য অনুযায়ী, বিশ্বে বিভিন্ন সামরিক অস্ত্রের পাশাপাশি জীবাণু অস্ত্র তৈরি হয়েছে যা Biological Weapon বলে পরিচিত। জাতিসংঘ প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, Biological Weapon হলো বিভিন্ন রোগব্যাধির জটিল প্রক্রিয়াকরণ করে এমন একধরনের অস্ত্র যা রাজনৈতিক গুপ্ত হত্যা, জীবজন্তু, ফসলাদির ক্ষতিসহ সমাজে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করার কাজে ব্যবহৃত হয় । পাশাপাশি প্রকৃতি থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন রোগের জীবাণুকে গবেষণাগারে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় জীবাণকেু আরও শক্তিশালী করে শত্রুপক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির লক্ষ্যে এই Biological Weapon বা জীবাণু অস্ত্র তৈরি বা ব্যবহার করা হয় ।

বিশ্বে বিভিন্ন যুদ্ধে এই ভয়ংকর Biological Weapon ব্যবহৃত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ১৯৭২ সনে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন স্বক্ষরিত হয় এবং যা বাংলাদেশ ১৯৮৫ সনে স্বাক্ষর করে । উক্ত কনভেনশনে Biological Weapon এর ভয়াবহ ব্যবহার সম্পর্কে সতর্ক করা হয় এবং মানবজাতির স্বার্থে এসব Biological Weapon বা জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয় । উক্ত কনভেনশনের Article – IV এ সকল সদস্য রাষ্ট্রকে এসব অস্ত্র সমূহ নিষিদ্ধ এবং প্রতিরোধের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ।

পরবর্তীতে বিভিন্ন দেশ এবং সন্ত্রাসীগোষ্ঠী দ্বারা এসব Biological Weapon এর ব্যবহার ও চোরাচালান প্রতিরোধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ২০০৪ এ একটি রেজুলেশন পাশ করে যেখানে এসব Biological Weapon কে বিশ্বের নিরাপত্তা ও শান্তির জন্য ভয়াবহ হুমকি হিসেবে অভিহিত করা হয় । পাশাপাশি প্রত্যেক রাষ্ট্রকে এসব Biological Weapon বা জীবাণু অস্ত্র প্রতিরোধ এবং চোরাচালান রোধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয় এবং কোন রাষ্ট্র এসব বিষয়ে অনভিজ্ঞ হলে বা কোন সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রয়োজনে অন্য সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা নিতে বলা হয় ।

বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ আংশকাজনভাবে বেড়ে যাচ্ছে । উক্ত ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস একটি Bio Agent. কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় এই যে, এই ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ এই ভাইরাসটিকে একটি জীবাণু অস্ত্র বা Biological Weapon হিসেবে তৈরি করেছে । এই বিষয়ে “The A to Z of Nuclear, Biological and Chemical Warfare” বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অপারেশন PX নামে জাপান উক্ত ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগের ভাইরাসকে জীবাণু অস্ত্রে রুপান্তর করে আমেরিকায় আক্রমণ করে ।

এছাড়া “Chemical and Biological Weapon and Terrorism” ব‌ইয়ের তথ্য অনুযায়ী মার্কিন সেনাবাহিনী যে সমস্ত জীবণু অস্ত্র তালিকা ভুক্ত করেছে তাদের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর ভাইরাস Virus – V3 হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে । সুতরাং এই ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশ এই রোগের ভাইরাসকে আরও শক্তিশালী করে একটি ভয়ঙ্কর জীবাণু অস্ত্র বা Biological Weapon হিসেবে তৈরি করেছে ।

উক্ত আইনী নোটিশে এডভোকেট মোঃ মাহমুদুল হাসান আংশকা করেছেন যে, ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হওয়ার পাশাপাশি সম্ভবত শত্রুভাবাপন্ন কোন দেশ বা গোষ্ঠী এই ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাসকে আরও শক্তিশালী করে বাংলাদেশের জনগণের উপর জীবাণু অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ বা পরিক্ষা চালাচ্ছে । একাজে মশাকে রোগ ছড়ানোর কাছে ব্যাবহৃত হচ্ছে।

হোক, উক্ত আইনী নোটিশের সকল পক্ষকে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে উক্ত ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস ধ্বংস এবং প্রতিরোধ করার অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস যেহেতু Biological Weapon হিসেবে স্বীকৃত এবং ব্যবহারের উদাহরণ রয়েছে সে কারনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কে উক্ত আইনী নোটিশের পক্ষভুক্ত করা হয়েছে।

পরিশেষে নোটিশ গ্রহিতাদের ব্যর্থতায় হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।