আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (ইনসেটে) ও আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম

মিন্নির ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে : আইনজীবী

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির চিকিৎসা প্রয়োজন বলে জানিয়ে তাঁর আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘জেল সুপারের উপস্থিতিতে মিন্নির সঙ্গে কথা হয়েছে। সে বলেছে তার সঙ্গে জোর-জবরদস্তি হয়েছে। তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে, সে খুব অসুস্থ। তার চিকিৎসার প্রয়োজন।’

আজ বুধবার (২৪ জুলাই) মিন্নির আইনজীবী তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন।

এ সময় সাংবাদিকরা মিন্নির ওপর কী ধরনের নির্যাতন চালানো হয়েছে জানতে চাইলে আইনজীবী বলেন, এ বিষয়ে সে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে সে খুব অসুস্থ। সে জানিয়েছে তার শরীরে খুব ব্যথা। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিল।

তবে এর আগে, জেল সুপার জানিয়েছিলেন ‘মিন্নি সুস্থ আছেন’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুল বারী বলেন, মিন্নি আজ জেল সুপারের সামনে নিজের অসুস্থতার কথা বলেছেন। পরে জেল সুপারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, মিন্নি অসুস্থ হলে তার সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সময় কারাগারে মিন্নি পড়াশোনা করতে চান বলে জানান তার আইনজীবী। এ বিষয়ে জেল সুপারের সঙ্গে কথাও হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, জেল সুপার জানিয়েছেন মিন্নির বাবা এ বিষয়ে আবেদন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে, ২২ জুলাই মিন্নির চিকিৎসার আবেদন নামঞ্জুর করেন বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম গাজী আবেদন নামঞ্জুর করে বলেন, জেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এর আগে, মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) মিন্নির জামিন আবেদন গ্রহণ করেছেন বরগুনা জেলা দায়রা ও জজ আদালত। এ দিন বিচারক আসাদুজ্জামানের এজলাসে জামিন আবেদনের শুনানি হয়। পরে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে নথি তলব করেন এবং আদেশ দেওয়ার জন্য ৩০ জুলাই তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।

গত ১৬ জুলাই মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। এর আগে ১৩ জুলাই রিফাতের বাবা ও হত্যা মামলাটির বাদী আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, তার ছেলে হত্যার ঘটনায় পুত্রবধূ মিন্নিও জড়িত বলে সন্দেহ করছেন তিনি। সেদিন মিন্নি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এমন সন্দেহের পেছনে ১০টি কারণও বলেন তিনি। এরপর তার সন্দেহের বিষয়টি আমলে নেয় পুলিশ।

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মিন্নিসহ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা সবাই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। তবে মামলার এজাহারভুক্ত ১২ আসামির মধ্যে এখনও চার জন গ্রেফতার হয়নি। তারা হচ্ছে- মুসা, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রায়হান ও রিফাত হাওলাদার। আগামী ৩১ জুলাই মামলার চার্জ গঠনের তারিখ ধার্য রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।