পুলিশ (প্রতীকী ছবি)
পুলিশ (প্রতীকী ছবি)

পুলিশের এসআই ও সোর্স মিলে আসামির স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

যশোরের শার্শায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পুলিশ উপ-পরিদর্শকসহ দুই জনের বিরুদ্ধে। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘অভিযোগ খুবই গুরুতর। প্রাথমিক তদন্তে যা আসবে, সে অনুযায়ীই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত এস আই খায়রুল শার্শার গোড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। আর অন্য অভিযুক্তের নাম কামরুল। তিনি এসআই খায়রুলের সোর্স।

ওই গৃহবধূ বলেন, ‘আমার স্বামী একসময় চোরাচালানিদের পণ্য বহন করতো। কিন্তু এখন কৃষিকাজ করে। ৯ দিন আগে (২৫ আগস্ট) এস আই খায়রুল বাড়ি থেকে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যান। পরে তিনি আমাদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আমার স্বামীকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে চালান দেওয়া হয়। আমি থানা পুলিশকেও বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা আমার কথা শোনেননি।’

ওই নারীর অভিযোগ, ‘সোমবার রাত আড়াইটার দিকে এস আই খায়রুল, সোর্স কামারুল এবং গ্রামের আরও তিন-চার জন এসে আমাকে ডাকাডাকি করেন। এত রাতে দরজা খুলতে না চাইলে তারা মামলার ব্যাপারে কথা বলবেন বলে জানান। তখন আমি দরজা খুলে দিই। এ সময় এস আই খায়রুল আবারও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে ৫৪ ধারায় মামলা করার হুমকি দেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে আমার ঝগড়াও হয়। একপর্যায়ে খায়রুল ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর তিনি ও কামরুল আমাকে ঘরেই ধর্ষণ করেন।’

ঘটনার শিকার দুই সন্তানের জননী বলেন, ‘তারা (এস আই খায়রুলসহ অন্যরা) চলে যাওয়ার পর ঘটনাটি প্রতিবেশীদের জানাই। তারা তখন মামলা করার পরামর্শ দেন। মামলা করতে হলে হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা করাতে হবে। এ কারণে আমি থানায় না গিয়ে সোজা যশোর জেনারেল হাসপাতালে যাই।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহম্মেদ বলেন, “আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারী জরুরি বিভাগে আসেন। তার কাছে অভিযোগ শুনে তাকে জানাই, এ ধরনের পরীক্ষা পুলিশের মাধ্যমে না এলে করা যায় না। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ওই নারীকে পুলিশ সুপারের কাছে নিয়ে যান।’

যোগাযোগ করা হলে পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সবিস্তার জানতে আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে যা আসবে, আইন অনুযায়ী আমরা সে ব্যবস্থাই নেবো। পুলিশ বলে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

এদিকে, বিকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আরিফ আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ভিকটিমের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর বিষয়টি সম্পর্কে সবিস্তার জানা যাবে।’