অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম

বিরোধ নিষ্পত্তিতে মেডিয়েশন পদ্ধতি জনপ্রিয় হবে : অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এক সময় বিশ্বের জনগণ মেডিয়েশনের গুরুত্ব উপলব্ধি করবে এবং বিরোধ নিরসনে এটাই জনপ্রিয় ও স্বাভাবিক পদ্ধতিতে পরিণত হবে।

আফ্রিকা মহাদেশেরতানজানিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী দারুস সালামে মেডিয়েশন ও আইন বিষয়ক প্রথম আফ্রিকা-এশিয়া সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মূল প্রবন্ধে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের আইন এবং মেডিয়েশনের মানে বুঝতে হবে যে, ঠিক কিভাবে এ দুটি সম্পর্কযুক্ত। আইন বলতে আমরা একটা সিস্টেম বা প্রক্রিয়াকে বুঝি, যার দ্বারা সরকার অপরাধ, ব্যবসায়িক চুক্তি/লেনদেন ও সামাজিক সম্পর্কগুলোর উন্নয়ন করে। যে তিনটি ক্ষেত্রের কথা আমি বলেছি, তার দুটিই মেডিয়েশনের আওতায় পড়ে।

অন্য কথায়, আইন ও মেডিয়েশন দুটিই ব্যবসায়িক লেনদেন ও সামাজিক যোগাযোগ/সম্পর্কগুলো সম্পাদনের প্রক্রিয়া। এবং দুটিই পৃথক প্রক্রিয়া -এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিষ্পত্তি করার জন্য। তাহলে এ দুটির মধ্যে মৌলিক পার্থক্য কী?

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, আইন নিয়ম-কানুন দ্বারা তৈরি একটি সিস্টেম/প্রক্রিয়া, যা সরকার দ্বারা প্রণীত এবং সকল জনগণ এর মাধ্যমে সমান আচরণ প্রত্যাশা করে। তাই যদি কখনো কোনো বিবাদের সৃষ্টি হয়, আইন অনুযায়ী আদালতে মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় পক্ষ সমূহ ও তাদের আইনজীবী থাকে, যারা যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে থাকেন।

অপরদিকে মেডিয়েশনের ক্ষেত্রে একে অপরের বিপরীত পক্ষ নয়। বরং উভয় পক্ষই যে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে এর মাধ্যমে তার একটা সৃষ্টিশীল সমাধান হয়। যার মাধ্যমে উভয় পক্ষই লাভবান ও উপকৃত হয়।

একজন মেডিয়েটর পক্ষগুলোকে এমন বিপরীতমুখী অবস্থান নেয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে, যাতে পরস্পর দোষারোপের মাধ্যমে উভয় পক্ষের সময় ও শ্রমের অপচয় রোধ হয়। মেডিয়েটর উভয় পক্ষকে তাদের আসল স্বার্থ এবং প্রয়োজনগুলো বুঝতে এবং একই দিকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের সরকারই আজ এমন আইন প্রণয়ন করছে যার ফলে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ মেডিয়েশনকে বিরোধ মীমাংসার পদ্ধতি হিসেবে বেছে নেয়।

বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটি (বিমস) ও আই-রিজলভের যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করে। তানজানিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী দারুস সালামে দুই দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক আদালতের সাবেক নারী বিচারপতি জয়েস অ্যালুচ, বিমসের আন্তর্জাতিক অ্যাম্বাসেডর ড. রিচার্ড বেনকিং, তানজানিয়ার স্কুল অব ল এর প্রিন্সিপাল জাকাইয়ো লুকুমে, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট আরবিট্রেশন অ্যান্ড মেডিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অনিল জাভিয়ার, ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েটরস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কেভিন ব্রাউন, কেনিয়া হাইকোর্টের আরবিট্রেটর মার্সি ওকিরো, বিমসের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী, তানজানিয়ার আন্তর্জাতিক মেডিয়েটর মেডলাইন, আন্তর্জাতিক মেডিয়েটর কে এস শর্মা, ইরাম মজিদ, বিমসের এক্সকিউটিভ সেক্রেটারি প্রিয়াংকা চক্রবর্তী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।