সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান

দুদকের মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন কারাগারে

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান এ নির্দেশ দেন।

আসামি তৌহিদুর রহমান হাইকোর্টের আদেশে ছয় সপ্তাহের জন্য জামিনে ছিলেন। ৮ সেপ্টেম্বর (রোববার) তার জামিনের মেয়াদ শেষ হয়। জামিন শেষ হওয়ার পর সোমবার স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের জন্য আবেদন করেন তিনি।

চাঞ্চল্যকর এই দুর্নীতির মামলার অপর আসামি হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন গত ২৭ আগস্ট আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকেও কারাগারে পাঠান। এছাড়া এ মামলার অপর পলাতক আসামি স্টোর কিপার ফজলুল হককে সম্প্রতি হাইকোর্ট এক আদেশে দেশ ত্যাগ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

আদালত সূত্র জানায়, এ মামলার প্রধান আসামি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান গত ২৯ জুলাই হাইকোর্টে স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন এবং ওই সময়ের মধ্যে নিম্ন আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশনা অনুযায়ী তৌহিদুর রহমান গত ২৫ আগস্ট সাতক্ষীরার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিননামা সম্পাদনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন বহাল রেখে জামিননামা সম্পাদনের নির্দেশ দেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় সোমবার তিনি আত্মসমর্পণ করেন।

এছাড়া চাঞ্চল্যকর এ মামলার অন্যতম পলাতক আসামি সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার ফজলুল হককের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল মিস নং ৩৪১১৭/১৮ তারিখ ১১.০৭.১৯ এর আদেশে পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামনগর থানাকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ফজলুল হককে ২১.০৭.১৯ তারিখের মধ্যে আটক করে নিম্ন আদালতে সোপর্দ করতে এবং তিনি যেন আদালতের আদেশ ব্যাতিরেকে দেশ ত্যাগ না করেন। কিন্তু ওই আদেশ পাওয়ার পর শ্যামনগর থানা পুলিশ ‘তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এবং অন্য এলাকায় বসবাস করে’ মর্মে একটি প্রতিবেদন দেন। পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগ গত ২১.০৭.১৯ তারিখের অপর একটি আদেশে আইজিপি, ডিজিএফআই এবং র‌্যাবের মহা পরিচালক ও পুলিশ সুপার সাতক্ষীরা এবং ওসি শ্যামনগর থানাকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়, ফজলুল হক যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে।

ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৯৮ হাজার ৬৪৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা আরও একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি শ্যামনগর উপজেলার ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের নামে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দীন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে স্পেশাল ২৫/১৯ নম্বর ওই মামলাটি দায়ের করেন।