গ্রেফতার (ছবি - প্রতীকী)
গ্রেফতার (ছবি - প্রতীকী)

জামিন জালিয়াতির অভিযোগে পেশকার গ্রেফতার

টাকার বিনিময়ে আসামিকে ভুয়া জামিন মঞ্জুরের রি-কল প্রদানের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আদালতের স্টেনো (পেশকার) শেখ মোস্তাক আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

খুলনা সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭ টায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়া পেশকার শেখ মোস্তাক বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের ধনপুতা গ্রামের বাসিন্দা। শেখ মোস্তাক ওই কোর্টের পেশকার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর মামলার আসামি ৪নং আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে একটি রি-কল জমা দেওয়ার পর এ জালিয়াতি সামনে আসে। মামলা গায়েব ও জামিনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পেশকার মোস্তাক আসামি পক্ষের সঙ্গে ৪লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি করেছিলেন বলে তদন্তে ধরা পড়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে আসামি জামিনের বিপরীতে যে রি-কল নিয়েছেন তা সঠিক নয়। পরবর্তীতে বিষয়টি তদন্ত করে ভুয়া প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় প্রতারণা মামলার আসামি শেখ রাজিব (৩২) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামি রাজিবের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। রাজিব ঢাকা উত্তারার সেক্টর-৯, রোড নং-৯ এর ২০নম্বর বাড়িতে বসবাস করেন। সে নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বাবরা গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলার অপর আসামি রাজিবের স্ত্রী সুমনা খানম (৩০)।

মামলার বিবরণে জানা যায়, দৌলতপুর পাবলা কেশবলাল রোডের মৃত. আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লার মেয়ে হীরা খানমের কাছ থেকে ব্যবসার কথা বলে ২৯লাখ টাকা ধার নেয় শেখ রাজিব। কিন্তু ওই টাকা ফেরত না দেওয়ায় গত বছরের ৩ অক্টোবর হীরা খানম রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন যার নং- ০৪। গত ১৮ এপ্রিল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ থেকে রাজিব ও স্ত্রী সুমনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয় উত্তরা পশ্চিম থানায়। যার প্রসেস নং ৯২/১৯ ও ৯৩/১৯।

গত ২৮ আগস্ট উত্তরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ইসলাম আসামিরা জামিন পেয়েছেন মর্মে ৩নং আদালতে রি-কল পাঠিয়ে দেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর মামলার ধার্য দিনে দেখা যায় ৪নং আদালত থেকে যে রি-কল নেওয়া হয়েছে তা উক্ত আদালতের নয়। আসামিরা নিজস্বার্থে অন্যদের সহয়তায় আদালতের স্বাক্ষর ও সীল জাল-জালিয়াতি করে প্রতারণা করেছে।

এ ঘটনায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বেঞ্চ সহকারী মো. জামাল হোসেন বাদী হয়ে শেখ রাজিব ও তার স্ত্রী সুমনা খানমের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেন যার নং- ০৬।

খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল বাহার বুলবুল বলেন, শেখ মোস্তাকের বিরুদ্ধে খুলনা থানার ৬ (৯) ১৯ নম্বর পেনাল কোডের মামলার রি-কল জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাইদ জানান, মামলার আসামি রাজিবের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে সোমবার সন্ধ্যায় সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে বেঞ্চ সহকারি শেখ মোস্তাককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এ জামিন জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে তথ্য রয়েছে।