নির্যাতনের চিহ্ন

ভারতে ছেলের বউকে পেটালেন সাবেক প্রধান বিচারপতি! (ভিডিও)

ছেলের বউকে অমানবিক নিপীড়ন করেছেন হাইকোর্টের একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। শুধু তাই নয় শিশুর সামনেই এই পৈশাচিক কাজ করেছেন তিনি। সম্প্রতি এই নির্যাতনের একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের হায়দরাবাদে।

ভিডিওতে দেখা গেছে, সোফার উপর আছড়ে ফেলা হচ্ছে এক যুবতীকে। দুহাত চেপে ধরে চড়-থাপ্পড় চলছে সমানে। মায়ের পা আঁকড়ে ধরে কাঁদছে বছর দুয়েকের এক শিশু। তাতেও চোখ ভিজল না শ্বশুরের। মাটিতে টেনে নামিয়ে ফের শুরু হল মার। বধূ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রায় দিতে গিয়ে একসময় গর্জে উঠেছিল যাঁর কলম, হাইকোর্টের সেই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকেই দেখা গেল নিজের পরিবারে হিংসার আগুন জ্বালাতে। খোদ রায়দাতার পরিবারেই বধূ নির্যাতনের এমন নগ্ন, নির্লজ্জ চেহারা দেখে চমকে উঠল ভারত।

এদিকে, নিজের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন সিন্ধু শর্মা। অভিযোগ জমা পড়েছে গত এপ্রিলেই। তাঁর ওপর নির্যাতনের এই ভিডিও সামনে এসেছে সম্প্রতি। কারণ পুলিশের হাতে সব প্রমাণ সেই সব তুলে দিতে পারেননি সিন্ধু। সারা শরীরে দগদগে ক্ষত নিয়ে হায়দরাবাদের অ্যাপোলো হাসপাতালই ছিল তাঁর ঠিকানা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই বয়ান দিয়েছেন। তারই ভিত্তিতে সিন্ধুর স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ, ৩২৩ ও ৪০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।

গৃহবধূ বলেন, প্রথমে আমি অভিযোগ জানাতে চাইনি। আমার চার বছর ও দু’বছরের দুটো মেয়ে রয়েছে। চেয়েছিলাম ওরা বাবার ভালোবাসা পাক, সবকিছু মিটে যাক। কিন্তু হলো না। আমার মেয়ে দুটোকেও ওরা আটকে

ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পরে, এমবিএ, মেধাবী ছাত্রী সিন্ধুর সঙ্গে হায়দরাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রামমোহন রাওয়ের ছেলে নুটি বশিষ্টের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে প্রতিটা দিনই ছিল সিন্ধুর কাছে যন্ত্রণার। বৃদ্ধ শ্বশুর তো বটেই, স্বামীর হাতেও মার খেতে হয়েছে দিনের পর দিন।

সিন্ধু জানিয়েছেন, মোটা টাকা পণ দিতে পারেননি তাঁর বাবা। সেই কারণেই শ্বশুরবাড়িতে এই হেনস্তা।

অত্যাচার চরম আকার নেয় গত এপ্রিলে। প্রায় প্রতিরাতেই কিভাবে তাঁর ওপর অত্যাচার চালানো হতো পুলিশকে সবিস্তারে জানিয়েছেন সিন্ধু। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজও সামনে এনেছেন তিনি। এতে দেখা গেছে, দুই মেয়ের সামনেই বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে সিন্ধুকে। মেয়েরা সামনে চলে এলে, তাদের ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেন সিন্ধুর স্বামী। গোটা ঘটনারই তিনি নীরব দর্শক।

সিন্ধু বলেন, আমার শাশুড়ি প্রতিদিন আমাকে হেনস্তা করতেন। আমার জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হতো। লজ্জা ঢাকতে দেওয়া হতো বিছানার চাদর।

২৬ এপ্রিল শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে আসেন সিন্ধু। তারপর দিনই সিন্ধু ও তাঁর পরিবার নির্যাতনের মামলা দায়ের করে। তখন তাঁর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক।

তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে ফিরে শ্বশুরবাড়ির সামনে অনশনে বসেছিলেন তিনি। তাতেও লাভ হয়নি।

সিন্ধু বলেন, আমার দুই মেয়েই খুব ছোটো। একজন এখনও বুকের দুধ খায়। তাদের উদ্ধার করুন।

পুলিশ জানিয়েছে, রামমোহন রাও হায়দরাবাদ হাইকোর্ট ও মাদ্রাজ হাইকোর্টের বিচারপতি ছিলেন। তাঁর বাড়িতেই এমন ঘটনা ঘটে চলেছিল ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি কেউ। সূত্র : দ্য ওয়াল