আইনজীবী ফোরামের নয়া কমিটি ঘিরে অভ্যন্তরীন বিরোধ তুঙ্গে

বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীন বিরোধ চরমে। এরইমধ্যে পদবঞ্চিতরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টে বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসিম ও আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামালের কক্ষ ভাংচুরের ঘটনাও ঘটেছে। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মূল ভবনের নিচতলায় তাদের কক্ষ। এসব ঘটনায় টানটান উত্তেজনা সুপ্রিম কোর্ট এলাকায়।

এদিকে আহ্বায়ক কমিটি থেকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মহসীন মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খানসহ ঢাকা বারের আটজন আইনজীবী নেতা পদত্যাগ করেছেন।

ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্ষোভের কথা কানে এসেছে। অনেক যোগ্য ব্যক্তিরা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন। যারা বাদ পড়েছেন তাদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা হচ্ছে। কক্ষ ভাংচুরের কথা শুনেছি। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যুগ্ম আহ্বায়ক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘ভাংচুর বা মিছিলের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। কোনো শ্লোগান শুনি নাই।’

এদিকে বার ভবনের কক্ষ ভাংচুরের ঘটনায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আইনজীবীদের কাছ থেকে এরকম আচরণ প্রত্যাশা করিনি। এটা ভাংচুরের জায়গা নয়। এটা পেশাজীবীদের স্থান। ভবনের কক্ষ কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয়। এটা বারের সম্পদ। তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

জানা যায়, প্রায় এক দশক ধরে ফোরামের সভাপতি পদে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ও মহাসচিব পদে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। নানা ঘটনার পর গত ৩ অক্টোবর বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনকে আহ্বায়ক এবং কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে সদস্য সচিব করে ১৭৯ সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে তিনমাসের মধ্যে সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু এই কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন বিএনপিপন্থী বেশ কিছু আইনজীবী। এ অবস্থায় গত দুইদিন ধরে অ্যাডভোকেট মনির হোসেন, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, অ্যাডভোকটে জুলফিকার আলী জুনুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করছেন কিছু আইনজীবী। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকেলে মিছিল চলাকালে ইট দিয়ে দুই আইনজীবী নেতার রুম ও দরজার কাচ ভাংচুর করা হয়। কক্ষে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

এদিকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. মহসিন মিয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান, মো. ইকবাল হোসেন ও মোসলেহ উদ্দিন জসিম, আইনজীবী নেতা হোসেন আলী খান হাসান, আমীরুল ইসলাম আমীর, মকবুল আহমেদ খান, ও মোরশেদা খাতুন শিল্পী আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

পদত্যাগপত্রে বলা হয়েছে, আইনজীবী নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই গুটি কয়েক ব্যক্তির মাধ্যমে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। একারণে পদত্যাগ করা হলো।

তবে আহ্বায়ক খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন,’কোনো পদত্যাগপত্র পাইনি। কারো কোনো ক্ষোভ থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’ সূত্র – কালের কণ্ঠ